রাসূল (সাঃ )যে সব কাজ করতেন ,যা আহার এবং পানীয় রূপে গ্রহণ করতেন তাই আল্লাহ তায়ালা সুন্নত করে দিয়েছেনা। আল্লাহর আদেশমতে ,যে রাসূল (সাঃ )এর আদর্শকে বাস্তবায়িত করতে পারবে সেই হবে দুনিয়া ও আখিরাতের সফলকাম।
বর্তমানে বিজ্ঞান এটাই করে যে ,হজরত মুহাম্মদ (সাঃ ) যে খাবার খেতেন সেগুলো অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ ) যে খাবার গুলো পছন্দ করতেন সেগুলো হলো :
১। খেজুর
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ ) এর সব থেকে প্রিয় খাবার ছিল খেজুর। নিয়মিত খেজুর খেলে শরীরের রোগ -প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে ,কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় ও চোখ ভালো থাকে।খেজুর উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। খেজুর একজন সুস্থ মানুষের শরীরে আয়রনের চাহিদার প্রায় ১১ ভাগই পুরুন করে।
তাছাড়াও খেজুরে আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন বি। যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। রাসূল (সাঃ ) বলেছেন ,যে বাড়িতে খেজুর গাছ নেই ,সে বাড়ির অধিবাসীরা অভুক্ত। রাসূল (সাঃ ) সন্তান প্রসবের পর প্রসূতি মাকেও খেজুর খাওয়াতে বলেছেন।
২। দুধ
রাসূল (সাঃ ) গরুর দুধ অনেক পছন্দ করতেন। গরুর দুধ পান করলে মেধা শক্তি বৃদ্ধি পায় ,স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়।দুধ খেলে শরীরের হাড় ও দাঁতের সামর্থ্য বাড়ে। দৃষ্টিশক্তি বাড়ে। নিয়মিত দুধ খেলে শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব দূর হয়।
রাসূল (সাঃ )বলেছেন তোমরা গরুর দুধ বেশি পান করো এবং গরুর গোশত কম খাও। বর্তমানে বিজ্ঞান ও এটাই বলেছে ,গরুর দুধে অনেক উপকার আর গরুর গোশত অনেক ক্ষতিকর।
৩। মাশরুম
রাসূল (সাঃ ) মাশরুম অনেক পছন্দ করতেন। মাশরুম খেলে চোখের জ্যোতি বাড়ে। গর্ভবতী মা ও শিশুর রোগ প্রতিরোধ করে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মাশরুম অনেক উপকারী।
তাছাড়াও চর্মরোগ প্রতিরোধে ,উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ,দাঁত ও হাড় গঠনে,ক্যান্সার ও টিউমার প্রতিরোধে ,চুল পড়া ও পাকা প্রতিরোধে ,দৃষ্টিশক্তি রক্ষায় মাশরুমের ভূমিকা অনেক
৪। কিসমিস
কিসমিস রাসূল (সাঃ ) এর আরেকটি প্রিয় খাবার। হজরত আব্বাস (রাঃ ) হতে বর্ণিত ,তিনি বলেছেন রাসূল (সাঃ ) এর জন্য প্রতিদিন কিসমিস ভিজিয়ে রাখা হতো ,তিনি সকালে উঠে কিসমিস এবং কিসমিসের পানি দুটোই খেতেন। তাজা আঙ্গুর ফল শুকিয়ে কিসমিস বানানো হয়। কিসমিসে অনেক উপকার।
৫। আঙ্গুর
আঙ্গুর রাসূল (সাঃ ) এর প্রিয় খাবার। আংগুর ফলে ভিটামিন এ, বি ,সি রয়েছে। আঙ্গুর ফলের ভিটামিন সি ত্বক ঠিক রাখে ,বয়সের ছাপ কমায়। কিডনি ভালো রাখতে ,চুলের যত্নে ,স্তন ক্যান্সার নির্মূলে ,মাথাব্যথা দূর করতে ,বদহজম দূর করতে আঙ্গুর অনেক বেশি কার্যকর।
৬। ডালিম
রাসূল (সাঃ ) এর প্রিয় খাবারের মধ্যে ডালিম অন্যতম। এ ফল মোটামুটি পৃথিবীর সব দেশেই কম বেশি পাওয়া যায়। এই ফল টিকে একেক দেশে একেক নামে ডাকা হয়। কোনো দেশে বলে ডালিম ,কোনো দেশে বলে আনার আবার কোনো দেশে বলে বেদানা।
ডালিমের মধ্যে অনেক উপকার আছে। ডালিম খেলে শরীরের রক্ত বৃদ্ধি পায়।ডালিম স্মৃতিশক্তি বাড়ায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে ,রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।,হজমে সহায়তা করে ,বয়সের ছাপ কমায়। ডালিম রক্তের ঘনত্ব ঠিক রাখে এবং এর বীজ রক্তের জমাট বাঁধতে ও ঘন হতে বাধা দেয়।
৭। জয়তুন
জয়তুন রাসূল (সাঃ ) বেশি খেতেন। রাসূল (সাঃ ) বলেছেন তোমরা জয়তুন খাও এবং জয়তুনের তেল খাও। রাসূল (সাঃ ) বলেছেন ,জয়তুন গাছের মধ্যে আল্লাহ তায়ালা অনেক পরিমান বরকত দিয়েছেন। জয়তুনের মধ্যে ভিটামিন ই পাওয়া যায়। এই ফল চুল পড়া প্রতিরোধ করে।
৮। ত্বীন ফল
রাসূল (সাঃ ) ত্বীন ফল অনেক পছন্দ করতেন। এই ফল বাংলাদেশে ডুমুর নামে পরিচিত। ডুমুরের মধ্যে অনেক উপকার রয়েছে। ডুমুর শরীরের মধ্যে শক্তি বৃদ্ধি করে। মরণব্যাধি ক্যান্সার থেকে রক্ষা করে। ডায়বেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকার করে।
৯। লাউ
রাসূল (সাঃ ) সবজি জাতীয় খাবারের মধ্যে লাউ বেশি পছন্দ করতেন।
হজরত আনাস (রা ) থেকে বর্ণিত ,একবার এক দর্জি রাসূল (সাঃ ) কে খাবারের দাওয়াত করে। রাসূল (সাঃ ) এর সামনে রুটি এবং গোশতের টুকরো ও লাউ মেশানো তরকারি দেয়া হয়। রাসূল (সাঃ ) প্লেট থেকে খুঁজে খুঁজে লাউ নিয়ে খেলেন।
১০। শসা
রাসূল (সাঃ ) শসা অনেক পছন্দ করতেন। শসা য় অনেক উপকার আছে। শসা দেহের পানিশূন্যতা দূর করে ,হজমে সহায়তা করে করে ,চোখের জ্যোতি বাড়ায় ,ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে ,ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে ,রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে ,কিডনি সুস্থ রাখে।
হজরত আয়েশা (রা ) থেকে বর্ণিত ,তিনি বলেন আমার মায়ের অনেক ইচ্ছা ছিল আমাকে সাস্থবতী বানিয়ে রাসূল (সাঃ ) এর কাছে পাঠাবেন। এ জন্য তিনি অনেক ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন কিন্তু কোনো ফল হয়নি। রাসূলুল্লাহ (সাঃ ) আমাকে পাকা খেজুরের সঙ্গে শসা খাওয়াতে থাকলে আমি তাতে উত্তমরূপে *******অধিকারী হই।
১১। মিঠাই ও মধু
হজরত আয়েশা (রা ) থেকে বর্ণিত ,তিনি বলেন রাসূল (সাঃ ) মিষ্টান্ন ও মধু অনেক পছন্দ করতেন। বুখারী শরীফের আরেকটি হাদিসে রাসূল (সাঃ ) বলেছেন ,মধু হলো উত্তম ঔষধ।
১২। কালোজিরা
রাসূল (সাঃ ) কালোজিরা পছন্দ করতেন। রাসূল (সাঃ ) বলেছেন ,কালোজিরা মৃত্যু ছাড়া সকল রোগের ঔষধ।
কালোজিরা গর্ভবতী মায়ের বুকে দুধ বৃদ্ধি করে। নিয়মিত খালি পেতে কালো জিরা খেলে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণ করে। কালোজিরা সর্দি ,জ্বর এর খুব ভালো কাজ করে। স্মরণশক্তি বৃদ্ধিতে এবং ব্যাথা নাশক হিসেবে কাজ করে।
কালোজিরাতে প্রায় ১০০ টির বেশি রাসায়নিক উপাদান থাকে।
এ ছাড়াও আরও বিভিন্ন বর্ণনায় জানা যায় ,রাসূল (সাঃ ) মরুভূমির এক ধরনের পাখির গোশত ,সারিদ ,বার্লি ,খরগোশের গোশত ,গাজর ,ভিনেগার ,মাখন ,খাসির পায়া ,গমের রুটি ,তরমুজ ও সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি পছন্দ করতেন।