মানুষ সারা দিন পরিশ্রম করে রাতে বিশ্রাম নিবে এটাই প্রকৃতির নিয়ম। ঘুম মানুষের চিন্তা পেরেশানি দূর করে মানুষের অন্তর ও মস্তিষ্ককে শান্তি প্রদান করে। এক জন সুস্থ মানুষের দৈনিক ৬ – ৭ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন।
ঘুম মানুষের শরীরের প্রয়োজন ছাড়াও আরো হাজারো উপকারিতা করে থাকে। এর ব্যতিক্রম ঘটলে মানুষের জীবনে নানা রকম বিপর্যয় ঘটতে পারে। বিশেষ করে ফজরের ও আসরের পরে ঘুমানো খুবই ক্ষতিকর। নানা রকম রোগের সৃষ্টি হতে পারে।
মহান আল্লাহু রব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে বলেছেন , আমি তোমাদের ঘুমকে করেছি বিশ্রাম , রাতকে করেছি আবরণ। ( সূরা : নাবা , আয়াত নং : ৯ – ১০ )
আমরা অনেকে সকালে অর্থাৎ ফজর নামাজ পরে ঘুমিয়ে থাকি। আবার অনেকে আছে যারা রাতে দেরি করে ঘুমিয়ে সকালে দেরি করে ঘুম থেকে উঠে। যার কারণে অনেকে ফজর নামাজ আদায় করতে পারে না আবার আদায় করলেও যখন ফজর নামাজের সময় শেষ হয়ে যায় তখন আদায় করে। এদের অনেক গুনাহ হবে পাশাপাশি অনেক ক্ষতিও হবে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা) ইশার নামাজ পরে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যেতে বলেছেন।
হাদিস শরীফে বর্ণনা করা হয়েছে , হজরত মুহাম্মদ (সা) ইশার নামাজ আদায়ের পূর্বে ঘুমানো এবং ইশার নামাজ আদায়ের পরে অহেতুক গল্প – গুজব করাকে অপছন্দ করতেন। ( সহীহ বোখারী , হাদিস নং : ৫১৪)
কিন্তু ভালো কাজের জন্য ইশার নামাজ আদায় করে জেগে থাকলে সেটা অন্য রকম বিষয়। যেমন বাড়িতে কোনো মেহমান আসলে তাদের সাথে কথা বলা কিংবা পরিবারকে সময় দেওয়া কিংবা জ্ঞান অর্জনের উদ্দেশ্যে জেগে থাকা।
ইশার নামাজ পরে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে গেলে সকালে সহজে জাগনা পাওয়া যাবে। ফজর নামাজ চাঞ্চল্যতার সাথে আদায় করা যাবে। নামাজে কোনো রকম আলসেমি হবে না। শরীরে আরাম বোধ হবে। কেননা দিনের বেলার ঘুম রাতের ঘুমের ঘাটতি পুরুন করতে পারে না।
পূর্ববর্তী আলেমরা ফজরের পরে ঘুমকে মাকরূহ মনে করতেন। অনেক মানুষ ফজর নামাজ পরে না ঘুমিয়ে কুরআন তেলাওয়াত করে এবং নানা রকম জিকির করে থাকে এটাই ইসলামের শিক্ষা।
ফজরের নামাজ আদায় করে ঘুমালে ভোরের বরকত থেকে বঞ্চিত হবে ফলে নানা রকম সমস্যা দেখা দিবে। রিজিক সংকুচিত হবে। ফজরের নামাজ পরে ঘুমালে অলসতা বৃদ্ধি পাবে ,কাজকর্মে অমনযোগী হয়ে পরবে।
দিনের শুরুটা ঘুমে থাকলে দিন সঙ্কীর্ণ হয়ে যাবে ফলে কাজের সময় কমে যাবে। আর যদি ফজর নামাজ পরে না ঘুমিয়ে কুরআন তেলাওয়াত করে নানা রকম জিকির করে কাজকর্ম শুরু করে তাহলে মহান আল্লাহ তায়ালা বান্দার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
সাখর গামেদী (রা) বর্ণনা করেন ,হজরত মুহাম্মদ (সা) মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করেছেন , হে আল্লাহ ! আমার উম্মতের জন্য দিনের শুরু বরকত ময় করুন। এ জন্য মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা) কোনো যুদ্ধে বাহিনী পাঠানোর সময় দিনের শুরুতে পাঠাতেন।
হাদিস বর্ণনাকারী ব্যক্তি ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। তিনি ব্যবসায়িক কাজকর্ম ভোরবেলায় শুরু করতেন। যার কারণে তার ব্যবসায় অনেক উন্নতি হয় এবং তিনি অনেক প্রাচুর্য লাভ করেন। ( সুনানে আবু দাউদ , হাদিস নং : ২৬০৬)
সকালে ঘুমালে কোনো গুনাহ হবে না। সকালে ঘুমানো মাকরূহ। কিন্তু সকালে গুমালে সমস্ত কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হতে হবে।