সকল মুসলিমদের জন্য দোয়া ইউনুস পরা খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং ফজিলতের কাজ ।দোয়া ইয়নুস পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা সকল বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করে ।কোন বিপদের সময় দোয়া ইউনুস পাঠ করা সুন্নত ।
আমাদের প্রিয় নবি হজরত ইউনুস (আ) বিপদে পরে আল্লাহকে স্মরণ করে এই দোয়া পাঠ করতেন । তার দোয়া কবুল করে আল্লাহ তায়ালা তাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করে ছিলেন ।
দোয়া ইউনুস এর ইতিহাস
অন্যান্য নবিদের মতই ইউনুস আলাইহিস সালাম একজন সন্মানিত নবি ।মহান আল্লাহ তায়ালা অন্যান্য নবিদের মত তাকে একটি দায়িত্ব দিয়ে নিনেভায় প্রেরণ করেছিলেন ।এটি তৎকালীন ইরাকের মসুলে অবস্থিত। তাকে তার জাতিকে আল্লাহর প্রতি আহ্বান ও তাওহিদ এবং রিসালাতের কথা পৌঁছে দিতে বলা হয়েছিল ।
ইউনুস আলাইহিস সালাম তার জাতিকে আল্লাহর কাছে ফিরে আসতে আহ্বান করেছিলেন ।কিন্তু তারা তার ডাকে সারা দেয়নি ।এতে হজরত ইউনুস আলাইহিস সালাম হতাস হয়ে আল্লাহর কাছে গজবের খবর দেন ।
হজরত ইউনুস আলাইহিস সালাম আল্লাহর নির্দেশের অপেক্ষা না করে নিনেভা ত্যাগ করেন। নিনেভা ত্যাগ করার সময় তিনি সমুদ্রে ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়েন। চালক ধারণা করে যে জাহাজে কোনো অপরাধী আছে। তিনি লটারির ব্যবস্থা করেন।
লটারিতে বার বার ইউনুস আলাইহিস সালামের নাম আসে। তখন ইউনুস আলাইহিস সালামকে জাহাজ থেকে ফেলে দেয়া হলে জাহাটি বিপাক থেকে রক্ষা পায়। তখন হজরত ইউনুস আলাইহিস সালাম মাছের পেটে চলে যান। বৃহদাকার মাছটি তাকে গিলে ফেলে।
এ সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে ,ইউনুস ও রাসূলদের একজন ছিল। স্মরণ করো ,যখন সে পালিয়ে বোঝাই নৌযানে পৌঁছল ,অতঃপর সে লটারিতে যোগদান করে পরাভূত হলো। পরে একটি মাছ তাকে গিলে ফেলে ,তখন সে নিজেকে ধিক্কার দিতে লাগল। সে যদি আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা না করত ,তাহলে কিয়ামত পর্যন্ত ওই উদরে থাকতে হতো। (সূরা:সাফফাত , আয়াত : ১৪৫ -১৪৮ )
হজরত ইউনুস আলাইহিস সালাম আল্লাহর নির্দেশ না নিয়ে স্বদেশ ত্যাগ করার কারনে অনুশোচনায় আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করেছিলেন। তিনি মাছের পেতে বসে দোয়া ইউনুস সর্বদা পাঠ করতেন।
আল্লাহ তায়ালা হজরত ইউনুস আলাইহিস সালামকে অনেক পরীক্ষা নেন। পরীক্ষা হিসেবে হজরত ইউনুস আলাইহিস সালাম মাছের পেটে ৪০ দিন ছিলেন। তিনি মাছের পেটে থেকেই আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতেন।
৪০ দিন পর আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেন। আল্লাহর হুকুমে মাছটি তাকে সমুদ্রের কিনারা উগরে দেয়। এভাবে ইউনুস আলাইহিস সালাম বিপদমুক্ত হয়।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন ,তখন আমি তার(ইউনুস ) ডাকে সারা দিয়েছিলাম এবং তাকে দুশ্চিন্তা থেকে উদ্ধার করেছিলাম। আর এভাবেই আমি মুমিনদের নাজাত দিয়ে থাকি (সূরা:আম্বিয়া ,আয়াত:৮৮)
পবিত্র কুরআনুল কারীমে ইউনুস আলাইহিস সালামের নামে একটি সূরা রয়েছে। পবিত্র কোরআনের ১০ নম্বর সূরা হজরত ইউনুস আলাইহিস সালামের নামে নামকরোকন করা হয়েছে।
হজরত ইউনুস আলাইহিস সালাম কে কুরআনে “জুন্নুন -সাহিবুল হূত “ নামে অভিহিত করা হয়েছে। জুন্নুন শব্দের অর্থ মাছের সঙ্গে সম্পৃক্ত অরে সাহিবুল হূত শব্দের অর্থ মৎস্য সহচর বা মাছওয়ালা।
হজরত ইউনুস আলাইহিস সালাম পেটে যে দোয়া পাঠ করতেন।
দোয়া ইউনুস আরবি
لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ، إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
দোয়া ইউনুস বাংলা উচ্চারণ
উচ্চারণ : লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জ -লিমিন।
বাংলা অনুবাদ
তুমি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই ,তুমি পবিত্র সুমহান। আমি নিশ্চয়ই জালিমদের দলভুক্ত।
দোয়া ইউনুস পাঠের ফজিলত
কোনো বিপদে পরে দোয়া ইউনুস পড়লে ,আল্লাহর রহমতে সে বিপদ থেকে উদ্ধার পায়। প্রতিদিন ১০০০ বার দোয়া ইউনুস পাঠ করলে পদমর্যাদা হয়। দোয়া ইউনুস পাঠ করলে রুজি রোজগার বৃদ্ধি পায় ,দুঃখ -কষ্ট ,পেরেশানি দূর হয়।
এ দোয়া এক লক্ষ পঁচিশ হাজার বার পড়লে (যেটা খতমে ইউনুস নাম পরিচিত )সব রকম বিপদ আপদ থেকে এবং বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
আমির সানআনি বলেন ,যদি বলা হয় এটা একটা জিকির ,দোয়া নয় ,তাহলে আমরা বলব ,এটি এমন একটা জিকির যা দ্বারা দোয়া শুরু হয়। এটা পড়ার পর যা ইচ্ছা দুআ করা যাবে। (আত -তানবীর )