আমরা সবাই জানি জন্মালে মরিতে হইবে। কোনো প্রাণীই বাদ যাবে না। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছে ,‘সব প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে। কেয়ামতের দিন তাদের প্রতিদান পূর্ণমাত্রায় দেওয়া হবে। সুতরাং যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে; তারাই সফল। আর দুনিয়ার জীবন ধোঁকা ছাড়া কিছুই নয়।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৮৫)
যারা দুনিয়াতে খারাপ কাজ করবে ,মহান আল্লাহর আদেশ – নিষেধ মেনে চলে না ,তার ইবাদাত বন্দেগী করবে না তাদের জন্য মৃত্যুর পরে রয়েছে কঠিন শাস্তি। তাদেরকে জাহান্নামে প্রবেশ করানো হবে।
আর যারা সফল অর্থাৎ দুনিয়াতে ভালো কাজ করবে ,মহান আল্লাহর সকল আদেশ – নিষেধ মেনে সৎ পথে চলবে ,তার ইবাদাত বন্দেগীতে মশগুল থাকে তাদেরকে জান্নাত দান করবেন। জাহান্নামের কঠিন শাস্তি থেকে মুক্তি পাবে।
যে ব্যক্তি গুলো জান্নাতে প্রবেশ করবে এমন কিছু লক্ষণ আছে যা মৃত্যুর মুহূর্তে অনেকের মাঝে দেখা যায়। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা) সে লক্ষণ গুলো বলেছেন। সেগুলো হলো :
১। কালেমা পাঠ করা
যে ব্যক্তি মৃত্যুর সময় কালেমা পাঠ করবে সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তির সর্বশেষ কথা হবে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু” তিনি জান্নাতে প্রবেশ করবেন।(আবু দাউদ)
২। বিন্দু বিন্দু ঘাম বের হওয়া
মৃত্যুর সময় যদি কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম বের হয় তাহলে সেই মৃত্যু হলো জান্নাতি মৃত্যুর লক্ষণ। বুরাইদা বিন হাছির (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি,”মুমিন ব্যক্তি কপালে ঘাম নিয়ে মৃত্যু বরন করে”।(মুসনাদে আহমদ ,তিরমিযী)
৩। জুমার রাতে বা দিনে মৃত্যু হওয়া
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত সময় হলো জুমার সময়। এই সময় যে ব্যক্তি মৃত্যু বরন করবে মহান আল্লাহ তায়ালা ঐব্যক্তিকে কবরের আজাব হতে নাজাত দিবেন।
হাদিস শরীফে এসেছে ,মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা) বলেছেন ,”যে ব্যক্তি জুমার রাতে বা দিনে মৃত্যু বরন করেন আল্লাহ তাকে কবরের আযাব থেকে নাজাত দেন”।(মুসনাদে আহমদ , তিরমিযী)
৪। নেক আমলরত অবস্থায় মৃত্যু
নেক আমল করার কালীন সময়ে মৃত্যুবরণ করা উত্তম লক্ষণ। তা হতে পারে মানুষের যে কোনো ভালো কাজ। অর্থাৎ মৃত্যুর আগ মূহূর্তে কালেমার তেলাওয়াত, রোজা পালন, দান-সাদকা করা, ন্যায় কথা বলা, ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত থাকা ইত্যাদি।
৫। প্রহরীর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মৃত্যু
আল্লাহর রাস্তায় পাহারা দিতে গিয়ে যদি কেও মৃত্যুবরণ করে তাহলের সে ব্যক্তি জান্নাতি। মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেছেন, একদিন একরাত পাহারা দেয়া এক মাস দিনে রোজা রাখা এবং রাতে নামাজ পড়ার চেয়ে উত্তম, আর যদি পাহাড়া রত অবস্থায় সে ব্যক্তি মারা যায় তাহলে তার জীবদ্দশায় সে যে আমল গুলো করতো এগুলোর সওয়াব চলমান থাকবে এবং সে শহীদ।
৬। আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধরত অবস্থায় মৃত্যু
যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করতে গিয়ে নিহত হয় তাকে শহীদ বলা হয়। শদীদ ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে। (সহীহ মুসলিম)
৭। প্লেগ বা মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু
” প্লেগ রোগে মৃত্যু প্রত্যক ঈমানদার এর জন্য শাহাদাত”(বুখারী)
৮। সন্তান প্রসব কালীন সময়ে মৃত্যু
যে নারী পেটে বাচ্চা নিয়েঅথবা প্রসবের সময় মারা যায় সে শহীদ। সন্তান জন্মের ৪০ অথবা ৬০ দিনের মধ্যে মারা গেলে সেও শহীদের অন্তর্ভুক্ত।
৯। আগুনে পুড়ে মৃত্যু
আগুনে পুড়ে মৃত্যু ব্যক্তি শহীদের অন্তর্ভুক্ত।
১০। পানিতে ডুবে মৃত্যু
নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন আমার ঈমানদার উম্মত যদি পানিতে ডুবে মারা যায় তাকে আল্লাহ তাআলা শহীদের অন্তর্ভুক্ত মৃত্যু বানিয়ে দেয় |
১১। পেটের অসুখে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু
১২। কোনো কিছু ধ্বসে পরে মৃত্যু
১৩। ধন সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে মৃত্যু
১৪। যদি কোনো ব্যক্তি আত্মরক্ষার জন্য মারা যায় তাহলে সে শহীদি মৃত্যুর অন্তর্ভুক্ত