পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। ইসলামে পরিষ্কার পরিছন্ন ও সাজ-সজ্জা সম্পর্কে বলা হয়েছে। হাদিস শরীফে বলা হয়েছে , রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ (জামিল) সুন্দর। তিনি সৌন্দর্যকে ভালোবাসেন। -(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৯১)
আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা) সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে থাকতেন। বর্তমান সময়ে সবাই বিভিন্ন ভাবে সাজ সজ্জা করে থাকে ঠিকই কিন্তু সেগুলো মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা) এর অনুকরণ নয়। নিজের ইচ্ছামত কিংবা অন্যকে অনুকরণ করে সেভাবে সাজ সজ্জা করে।
এভাবে সাজ সজ্জা করা উচিত হয় না। এভাবে সাজ সজ্জা করলে ইসলামের বিপরীত হয়ে যাবে কারণ ইসলাম এভাবে সাজ সজ্জা করা হারাম করেছেন। আমাদের উচিত মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা) এর দেখানো পথ অনুসরণ করা এবং যেগুলো নিষেধাজ্ঞা করেছেন সেগুলো মেনে চলা।
১। লাল ও হলুদ রংয়ের জামা পরিধান করা।
লাল ও হলুদ রংয়ের পোশাক ছেলেদের পরিধান করতে নিষেধ করা হয়েছে।
২। চুল কালার করা।
চুল দাড়ি সাদা হয়ে গেলে তা কলপ করা যাবে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা) নিজে করেছেন এবং উম্মতকে তা ব্যবহার করতে বলেছেন। এটা করা সুন্নত। কলপ করা জন্য মেহেদী ও কাতাম ব্যবহার করতে হবে।
কালো চুলকে অন্য রঙ দিয়ে রাঙানো আল্লাহর অনুমতি ছাড়া তাঁর সৃষ্টির পরিবর্তন ঘটানোর আওতাভুক্ত হতে পারে। সুতরাং তা বর্জনীয়।
৩। টাখনুর নিচে কাপড় পড়া
টাখনুর নিচে কাপড় পড়া ছেলের জন্য হারাম ছেলেরা সব সময় টাখনুর উপরে কাপড় পরিধান করবে। মেয়েরা সাধারণত টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করবে।
৪। কানের দুল ব্যবহার করা ও হাতে চুরি বা ব্রেসলেট দেওয়া।
কানে দুল পড়া ও হাতে চুরি বা ব্রেসলেট পড়া মেয়েদের সাজ সজ্জা। এগুলো করলে মেয়েদের অনুকরণ করা হবে।
হাদিস শরীফে বলা হয়েছে ,হজরত মুহাম্মদ (সা) বলেছেন ,‘যে সব নারী পুরুষদের সাদৃশ্য অবলম্বন করে এবং যে সব পুরুষ নারীদের সাদৃশ্য অবলম্বন করে, তারা আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।’ (আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. হতে বর্ণিত, সহীহুল জামে হা/৪৫৩৩, সহীহ)
৫। রেশমি কাপড় পড়া ও স্বর্ণ ব্যবহার করা।
অনেক ছেলেরা রেশমি কাপড় ও স্বর্ণের তৈরী বিভিন্ন ধরণের অলংকার ব্যবহার করে থাকে এগুলো ব্যবহার করা বৈধ নয়। এগুলো নারীদের জন্য বৈধ। পুরুষদের জন্য রৌপ্যের তৈরি কেবল আংটি ছাড়া অন্য কোনও কিছু ব্যবহার করা বৈধ নয়।
যায়েদ ইবনে আকরাম রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘স্বর্ণ ও রেশমি বস্ত্র আমার উম্মতের নারীদের জন্য বৈধ এবং পুরুষের জন্য হারাম করা হয়েছে।’ (সিলসিলা সহীহা হা/১৮৬৫/৩০৩০)
অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘আবদুল্লাহ ইবনুয যুবাইর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি ‘আলী ইবনে আবু তালিব রা.-কে বলতে শুনেছেন,‘আল্লাহর নবী-সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ডান হাতে রেশম ও বাম হাতে স্বর্ণ নিয়ে বললেন, এ দু’টি জিনিস আমার উম্মতের পুরুষদের জন্য হারাম।’ (সুনানে আবু দাউদ, অনুচ্ছেদ নারীদের জন্য রেশমি পোশাক বৈধ, সহিহ)
৬। শরীরে ট্যাটু করা।
শরীরে ট্যাটু করা ইসলামে নিষেধ করা হয়েছে। এগুলো বিজাতিরা করে থাকে। বিজাতিদের অনুসরণ করা হারাম। আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ,‘যে ব্যক্তি বিজাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে, সে তাদের দলভুক্ত হিসেবে গণ্য হবে।’ -(সুনানে আবু দাউদ, অধ্যায়: পোশাক-পরিচ্ছেদ হা/৪০৩১-হাসান সহিহ)