ইশরাক মূলত আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো আলোকিত হওয়া। সূর্য উদয় হওয়ার পরে পৃথিবী যখন আলোকিত হয় তখন এই নামাজের আদায় করা হয়। ইশরাক নামাজ হলো নফল নামাজ। ইশরাক নামাজ নফল নামাজ হলেও এই নামাজের ফজিলত ও মর্যাদা অন্য নফল নামাজের তুলনায় অনেক বেশি।
ফজরের নামাজ পরে জায়নামাজে বসে জিকির ,কুরআন তেলাওয়াত ও অন্য তাসবীহ পথ করে দুনিয়ার কথাবার্তা না বলে সূর্য উদয় হওয়ার পরে এ নামাজ আদায় করলে অনেক সোয়াব পাওয়া যায়। কিন্তু দীৰ্ঘ সময় জায়নামাজে বসে অপেক্ষা করতে না পারলে পরে পড়লে কোনো সমস্যা হবে না। শুধু সওয়াব কম পাওয়া যাবে।
ইশরাক নামাজের পড়ার সময়
ইশরাক নামাজ পড়ার সময় হচ্ছে, সূর্য উদিত হওয়ার পর থেকে এক বর্শা পরিমাণ উদিত মধ্যাকাশে আসার আগ পর্যন্ত এই সময়ের মধ্যে আদায় করলে ইশরাকের নামাজ আদায় হয়ে যাবে। এক বর্শা মানে দেড় মিটারের মতো আবার অনেকেই বলেছেন এক মিটারের মতো। অর্থাৎ সূর্য উদয় হওয়ার ১০/১২ মিনিট পর।
ইশরাক নামাজ কত রাকাত
ইশরাক নামাজ হলো নফল নামাজ। এর নির্দিষ্ট রাকাত সংখ্যা উল্লেখ করা নেই। এই নামাজ দুই রাকাত করে পড়তে হয়। অনেকেই দুই রাকাত করে ৮ রাকাত অথবা ১২ রাকাত পরে থাকে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা) ইশরাক নামাজ দুই রাকাত করে ৪ রাকাত আদায় করতেন।
ইশরাক নামাজের নিয়ম এবং নিয়ত
ইশরাক নামাজ অন্য নফল নামাজের মতো করে দুই রাকাত করে আদায় করতে হয়। এই নির্দিষ্ট কোনো নিয়ম এবং নিয়ত নেই। বাংলায় এভাবে নিয়ত করা যাবে।
আল্লাহর ওয়াস্তে কিবলামুখী হয়ে নবীর সুন্নাত দুই রাক’আত ইশরাকের নামায পড়ছি, আল্লাহু আকবার
ইশরাক নামাজের ফজিলত
হজরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজর নামাজ জামাতে আদায় করার পর সূর্য উঠার আগ পর্যন্ত ওখানে বসে বসেই আল্লাহর জিকির করে। তারপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করে। তার জন্য পূর্ণাঙ্গ হজ ও ওমরার সমান সাওয়াব রয়েছে।’ (তিরমিজি, মিশকাত)
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা) ইশরাক নামাজের সাথে আরো দুই রাকাত নামাজ আদায় করতেন। ইশরাক নামাজের সাথে আরো দুই রাকাত নামাজ আদায় করলে বান্দার সকল কাজের জিম্মাদার হন মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন।
ইশরাকের নামাজের সাথে আরো দুই রাকাত নামাজের বিষয়ে হাদীসে বলা হয়েছে ,‘আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন, বান্দা যদি সকালে চার রাকাত নামাজ পড়ে, সন্ধ্যা পর্যন্ত বান্দার যত কাজ আছে আমি আল্লাহ তার সকল কাজের জিম্মাদার হয়ে যাই। (জামে তিরমিযী ১/১০৮)