কিতাব শব্দের অর্থ হচ্ছে লিপিবদ্ধ বা লিখিত বস্তু। এর আরো কয়েকটি প্রতিশব্দ হলো গ্রন্থ, বই, পুস্তক ইত্যাদি। ইসলামে যে ৭ টি বিষয়ের ওপর ঈমান আনতে বা বিশ্বাস স্থাপন করতে বলা হয়েছে তার মধ্যে তৃতীয় বিষয় হলো আসমানী কিতাবসমূহের ওপর বিশ্বাস। আসমানী কিতাব কয়টি ও কি কি ?
মহান আল্লাহ তায়ালা মানব জাতিকে সৃষ্টি করে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিয়ে দায়িত্বমুক্ত হন নাই। তাদের হেদায়াতের জন্য যুগে যুগে বাণী পাঠিয়েছেন। আল্লাহর এই বাণী মানবজাতির জন্য পথ নির্দেশক ,পথভ্রষ্টার ঘোর অন্ধকার হতে সত্যের আলোকে আনার জন্য আলোকবর্তিকা স্বরূপ।
আসমানী কিতাব কাকে বলে ?
শরীয়তের পরিভাষায় যেসব কিতাব আল্লাহ তা’আলা মানব জাতির হেদায়েতের জন্য দিক-নির্দেশনা স্বরূপ যে বাণী নাযিল করেছেন তাকে আসমানী কিতাব বলে।
আল্লাহ তা’আলা জিবরাঈল আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাধ্যমে আল্লাহর বাণী সমূহ রাসূলগণের নিকট প্রেরণ করেছেন। অতঃপর নবী-রাসূলগণ তা মানুষের নিকট পৌঁছে দিয়েছেন।
আসমানী কিতাব কয়টি ও কি কি ?
মহান আল্লাহ তায়ালা মোট ১০৪ টি আসমানী কিতাব নাজিল করেছেন। এরমধ্যে ৪ খানা হলো বড় আর ১০০ খানা হলো ছোট। ছোট কিতাব গুলোকে সহীফা বলা হয়।
৪ খানা আসমানী কিতাব গুলো হলো :
১। তাওরাত
২। যাবূর
৩। ইঞ্জিল
৪। কুরআন
আসমানী কিতাব কোন কোন নবী রাসূলের ওপর নাজিল হয়েছে
বড় আসমানী কিতাব ৪ জন প্রসিদ্ধ রাসূলের ওপর নাজিল হয়েছে। তারা হলো:
১। তাওরাত – হযরত মূসা (আ:) এর উপর নাযিল হয়েছে।
তাওরাত কিতাব বহু বছর ধরে দুর্নীতি এবং বিকৃতির শিকার হয়েছে তাই এটি এখন আর নির্ভরযোগ্য নয়। হজরত মুসা (আ) এর ভাই ইসরাইলের লোকদের নিকট ঈশ্বরের বার্তা প্রচার করার জন্য তাওরাত কিতাব ব্যবহার করেছিলেন।
২। যাবুর – হযরত দাউদ (আ:) এর উপর নাযিল হয়েছে।
যাবূর কিতাবকে প্রায়ই গীতসংহিতা হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়।
৩। ইঞ্জিল – হযরত ঈসা (আ:) এর উপর নাযিল হয়েছে।
৪। কোরআন – বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর উপর নাযিল হয়েছে।
কুরআন হলো ইসলামের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানী কিতাব। এই কিতাব মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা) এর ওপর ফেরেশতা জিব্রাইল (আ) এর মাধ্যমে নাজিল হয়েছে। কুরআন ষড়ড়ফ সম্পন্ন নাজিল হতে ২৩ বছর সময় লেগেছিল।
কুরআন অবতীর্ণ হয় ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে তখন হযরত মুহাম্মদ(স)-এর বয়স ছিলো ৪০ বছর এবং কুরআন সম্পূর্ণ নাজিল হতে তার বয়স ৬৩ বছর হয়েছিল।
বাকী একশ খানা সহিফা মোট 4 জন নবীর উপর নাযিল হয়। তারা হলেন:
১। হযরত আদম (আ:) – 10 খানা সহীফা নাজিল হয়েছে
২। হযরত শিস (আ:) – 50 খানা সহিফা নাজিল হয়েছে
৩। হযরত ইব্রাহিম (আ:) – 10 খানা সহিফা নাজিল হয়েছে
৪। হযরত ইদ্রিস (আ:) – 30 খানা সহিফা নাজিল হয়েছে