বিসমিল্লাহ শরীফের বৈশিষ্ট্য
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন বিসমিল্লাহ শরীফের মধ্যে ১৯ টি হরফ। এ ১৯ টি হরফের বিশেষত্ব হলো ,দিবা রাত্রিতে মোট ২৪ ঘন্টা। পাঁচ ঘন্টা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য নির্দিষ্ট ,বাকি ১৯ ঘন্টা মানুষ কাজ-কর্ম ,চলা ফেরা ,পানাহার ও নিদ্রায় কাটায়।
মহান আল্লাহ তায়ালা ঐ সময়ের মধ্যে এবাদতের জন্য বিস্মিল্লাহকে নির্দিষ্ট করেছেন। প্রতি ঘন্টায় ১৯ বার করে বিসমিল্লাহ পাঠ করা উচিত।
হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে যখন বিসমিল্লাহ শরীফ অবতীর্ণ হয় ,তখন তার মর্যাদা ও মহানুভবতার ভয়ে পাহাড় পর্বত কম্পমান হতে থাকে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ )বলেন ,যে ব্যক্তি দোযখ রক্ষী ১৯ জন ফেরেশতার আজাব হতে মুক্তি পেতে চায়,তার কর্তব্য বিসমিল্লাহ পাঠ করা। কারণ ,বিসমিল্লাহ তে ১৯ টি হরফ।
এক একটি হরফ পাঠের বরকতে এক এক জন ফেরেশতার কঠোর আজাব হতে মুক্তি পাওয়া যাবে।
হযরত জাবের (রাঃ ) বলেন ,হযরত আদম (আঃ ) এর উপর যখন বিসমিল্লাহ শরীফ অবতীর্ণ হয় ,তখন মেঘমালা আকাশ হতে পূর্বদিকে ধাবিত হয় ,বায়ু প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় ,সমুদ্রের স্রোতধারা থমকে দাড়ায় ,হিংস্র জন্তু তাদের স্বভাবসিদ্ধ ভুলিয়া যায় এবং শয়তানকে আকাশ হতে বিতাড়িত করা হয়।
বিসমিল্লাহ শরীফের ফজিলত ও আমল
হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে ,আমিরুল মুমিনীন হজরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ ) বলেছেন ,হযরত মুহাম্মদ (সাঃ ) ফরমায়েছেন যে ব্যক্তি
” বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”
পাঠ করে আল্লাহ পাক তার জন্য তার জন্য দশ হাজার নেকি লেখেন ,দশ হাজার পাপ মার্জনা করেন এবং দশ হাজার উচ্চ মর্যাদা দেন করেন।
যে ব্যক্তি এক বার বিসমিল্লাহ পাঠ করে তার সমস্ত গুনাহের মধ্যে একটিও ছগীরা গুনাহ থাকে না।
হাদিস শরীফে বলা হয়েছে ,যে সময় কোনো ব্যক্তি” বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”পাঠ করে ,তখন শয়তান এমন ভাবে গলে যায় ,যেমন ভাবে সীসা আগুনে গলে যায়।
নবী করীম (সাঃ ) বলেছেন ,যখন মানুষ প্রস্রাব পায়খানার জন্য ,নিজ স্ত্রীর সাথে মিলনের জন্য তৈরী হয় ,তখন শয়তান তার প্রত্যেক কাজে অনিষ্ট করে। কিন্তু যখন বিসমিল্লাহ পড়ে তৈরী হয় তখন পুরুষ হোক বা স্ত্রী লোক হোক তার মধ্যে এবং শয়তানের মধ্যে একটি আবরণ পরে যায়। তাতে তার শরীর কেউ দেখতে পায় না আর দেখলেও কোনো অনিষ্ট করতে পারে না।
যে ব্যক্তি নিয়মিত বিসমিল্লাহ পাঠ করবে কিয়ামতের দিন সে আল্লাহর রহমতের মধ্যে ডুবে যাবে অথার্ৎ বেহেশতের অশেষ নেয়ামত পাবে।
ওছুলতে ফারুকী নামক কিতাবে বর্ণিত আছে ,রোম সম্রাট খলিফাতুল মুসলিমিন হযরত ওমর (রাঃ )দরবারে তার মাথা ব্যাথার কথা জানিয়ে প্রতিকারের জন্য আবেদন করেছিল। হজরত ওমর (রাঃ )তাকে একটি টুপি প্রেরণ করেছিলেন, যতক্ষণ এ টুপি মাথায় থাকতো ততক্ষণ মাথা ব্যাথা হতো না। কিন্তু যখনই মাথা থেকে টুপি সরানো হতো সাথে সাথে মাথা ব্যথা শুরু হতো।
এ ঘটনায় সবাই বিস্মিত হয়। অবশেষে টুপি খুলে এর কারণ অনুসন্ধান করে দেখা গেলো যে তাতে শুধু একটি শব্দ লিপিবদ্ধ রয়েছে ,তা হলো “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম “
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ ) বলেন কোনো বৈধ কাজ শুরু করার আগে বিসমিল্লাহ না পড়লে সে কাজে বরকত আসে না।
প্রতি রবিবার সূর্যদয়ের সময় কেবলার দিকে মুখ করে ৩১৩ বার বিসমিল্লাহ শরীফ পাঠ করে পরে ১০০ বার দরূদ শরীফ পাঠ করলে রুজী রোজগার বাড়বে।
প্রতিদিন ৭৮৬ বার বিসমিল্লাহ শরীফ পাঠ করলে মনের বাসনা পূর্ণ হয়,শত্রু দমন হয় এবং ব্যবসা বাণিজ্যে লাভ হয়। রাতে গুমানোর আগে ২১ বার বিসমিল্লাহ শরীফ পরে গুমালে সারা রাত বিপদ আপদ হতে নিরাপদে কাটবে এবং শয়তান ,চোর ডাকাত প্রভৃতি দুর্ঘটনা হতে রক্ষা পাবে।
যে ব্যক্তি ফজর নামাজের পর ৩০ বার ,যোহর নামাজের পর ১৫ বার ,আসর নামাজের পর ২০ বার ,মাগরিব নামাজের পর ২৫ বার এবং এশা নামাজের পর ১০ বার সূরা ফাতিহা বিসমিল্লাহ সহ পাঠ করবে মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে রুযী রোজগারে বরকত দিবেন ,তার সম্মান বৃদ্ধি করে দিবে ,তার সকল আশা পূর্ণ করে দিবেন এবং তার দোয়া কবুল করবেন।