নামাজ না পড়লে কি কি শাস্তি হয় ? Namaz na porle ki hoy

মহান রব্বুল আলামিন কতগুলো মৌলিক কাজকে ভিত্তি করিয়াই সুমহান ইমারত প্রতিষ্ঠা করেছেন ।কোন ইমারতের ভিত্তিপ্রস্তরগুলি সরিয়ে দিলে যেমন ধবংস হয়ে যাবে তেমনি ইসলামের মৌলিক কাজসমূহকে বাদ দিলে মুসলিমরা লোপ পেয়ে যাবে ।

ওই কাজগুলি ইসলামের অপরিহার্য অংশ ।এ জন্য এই কাজ গুলোকে “আরাকানে ইসলাম “বলা হয় ।

আরাকান আরবি শব্দ ।আরাকান হল” রুকন ” শব্দের বহুবচন। রুকন শব্দের অর্থ হল মৌলিক উপাদান ,খুঁটি ,ভিত্তি । ৫ টি স্তম্ভের ওপর ইসলামের ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছে ।সেই গুলোকে “আরাকানে ইসলাম” বা ইসলামের পঞ্চবেনা বলা হয় ।

মানুষের যেমন হাত ,পা , নাক ,কান ইত্যাদি অঙ্গ নিয়ে দেহ গঠিত হয়েছে । এর একটি অঙ্গ বাদ দিলে দেহের অস্তিত্ব লোপ পেয়ে যায় তেমনি আরাকানে ইসলামের একটি কাজ বাদ দিলে ইসলামের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যাবে ।

ইসলামের এ ৫ টি স্তম্ভ হল

১ । কালেমা
২ । নামাজ
৩ । সাওম
৪ । হজ্জ
৫ । যাকাত

নামাজ হল ইসলামের দ্বিতীয় রুকন ।ইমানের পরেই নামাজের স্থান ।প্রত্যেক বালেগ নারী ও পুরুষের ওপর দৈনিক ৫ ওয়াক্ত নামাজ মহান আল্লাহ তায়ালা

ফরজ করেছেন ।একজনের পরিবর্তে অন্যজন নামাজ আদায় করলে চলবে না ।যে ব্যক্তি নামাজকে অস্বীকার করে তাকে কাফের বলা হয় ।নামাজ তরক করা দুরের কথা ,বিনা ওজরে নামাজ কাজা করিলেও গুনাহ হবে ।

মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে ৮২ বার নামাজের কথা উল্লেখ করেছেন ।কেয়ামতের দিন সর্ব প্রথম বান্দাদের নামাজের হিসাব নেয়া হবে । নামাজকে বেহেশতের চাবি বলা হয় ।

মহানবি হজরত মুহাম্মাদ (সা) বলেছেন ,যে ব্যক্তি নামাজ আদায় করিল ,সে ধর্মকে সুপ্রতিষ্ঠিত করল ।আর যে নামাকে তরক বা বাদ দিল সে ব্যক্তি ধর্মকে বিনাশ করিল ।নামাজ না পরলে ,রীতিমত আদায় না করলে তার ওপর আজাব নাজিল হবে ।

বেনামাজির শাস্তি

নিয়মিত নামাজ আদায় না করলে মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন তার ওপর ১৫ টি আজাব নাজিল করে রেখেছেন । বেনামাজি ব্যক্তি দুনিয়াতে ৬ টি আজাব ভোগ করবে ,মৃত্যুর সময় ৩ টি ,কবরের মধ্যে ৩ টি ,হাশরের মাঠে ৩ টি আজাব ভোগ করবে ।

দুনিয়ার মধ্যে ৬ টি আজাব হল

১ । বেনামাজির হায়াত কমে যাবে ।
২ । বেনামাজির জিবনে বরকত হবে না ।
৩ । বেনামাজির চেহারার সৌন্দর্য থাকবে না ।
৪ । বেনামাজির কোন দোয়া কবুল হবে না ।
৫ । বেনামাজির সব নেকি বরবাদ হয়ে যাবে ।
৬ । বেনামাজির নিকত হতে সব রহমতের ফেরেশতারা দূরে সরে যাবে এবং এক সময় ইসলাম হতে খারিজ হয়ে যাবে ।

মৃত্যুর সময় ৩ টি আজাব হল

১ । বেনামাজি মৃত্যুর সময় অপমানিত , লাঞ্চিত ও অতি কষ্ট পাবে ।
২ । বেনামাজি ক্ষুধার্ত অবস্থায় মৃত্যু বরন করবে ।
৩ । বেনামাজির মৃত্যুর সময় এত পিপাসা পাবে যে মনে চাবে ৭ দরিয়ার পানি যদি মুখে ঢেলে দেয় তবুও পিপাসা মিটবে না ।

বেনামাজির কবরের মধ্যে ৩ টি আজাব হল

১ । বেনামাজির কবর চেপে এসে তাকে পিষতে থাকবে ।এতে তার এক পাঁজরের হাড় অন্য পাঁজরের হারের সাথে মিশে যাবে ।
২ । বেনামাজির কবরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে থাকবে ।
৩ । বেনামাজির কবরে বিরাট বিরাট সাপ এসে ভরে যাবে এবং এক জন ফেরেশতা এসে জোরে জোরে গুর্জ মারতে থাকবে ।

বেনামাজির হাশরের মাঠের ৩ টি আজাব হল

১ । বেনামাজিকে মহান আল্লাহ তায়ালা গজবের সহিত ডাকবেন এবং বিরাট এক সাপ এসে তাকে খোঁজ করতে থাকবে ।
২ । ত্রিশ হাজার বৎসরের পুলসিরাতের রাস্তা ,যা হিরার চেয়ে ধারালো ,চুলের চেয়ে চিকন ,আমাবশ্যার রাতের চেয়ে অন্ধকার , বেনামাজি যখন পুলের ওপর
পা রাখবে সঙ্গে সঙ্গে তার পা কেটে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে ।
৩ । বেনামাজির জন্য ” ওয়াইল ” নামক জাহান্নাম ঠিক করে রেখেছেন ,ফেরেশতারা কেয়ামতের দিন দোজখে ফেলে আজাব দিবেন ।

মহানবি হজরত মুহাম্মাদ (সা) বলেন ,বেনামাজির দুই হাত জিঞ্জির দ্বারা বাধা হবে ।অতপর ফেরেশতারা তার মুখমণ্ডল ও পৃষ্ঠে আঘাত মারতে থাকবে ।

তখন বেহেশত তাকে বলবে ,ওহে আল্লাহর শত্রু ! আমার সাথে তোমার কোন সম্পর্ক নেই । আমি তোমার নই ,তুমিও আমার নও ।তখন জাহান্নাম তাকে ডেকে বলবে
আস! আমার নিকট আস ! আমি তোমার তুমি আমার ।

হাদিস শরিফে রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন ,জাহান্নামে ” লমলম ” নামে একটি জায়গা আছে দেখতে উটের গর্দানের মত এবং এক মাসের পথের ন্যায় দীর্ঘ্য ভয়ংকর সাপ

দ্বারা ঐ জায়গাটি পরিপুর্ন , সেখানে বেনামাজিদেরকে ফেলে দেয়া হবে ।লক্ষ লক্ষ সাপ বেনামাজিকে পেঁচ দিয়ে ধরবে এবং দংশন করতে থাকবে ।

মহানবি হজরত মুহাম্মাদ (সা) আরও বলেছেন , জাহান্নামের মধ্যে ” জুব্বুল হুজুন” নামক একটি বিরাট আকারের ময়দান রয়েছে ,উহা শুধু বিচ্ছু দ্বারা পরিপুর্ন । এক একটি বিচ্ছু খচ্চরের মত উচু ও মোটা । বেনামাজিদেরকে দংশন করার জন্যই তাদের সৃষ্টি করা হয়েছে ।

Sharing Is Caring:

Leave a Comment