জান্নাতীদের দেখতে কেমন হবে । জান্নাতি নারী ও পুরুষ কি পাবে ?

জান্নাতীদের দেখতে কেমন হবে । জান্নাতি নারী ও পুরুষ কি পাবে ?

মুমিন ব্যক্তিরাই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। মুমিন ব্যক্তির দুনিয়াতে যে দৈহিক কাঠামো ও সৌন্দর্য ছিল ,জান্নাতে ওই রকম দৈহিক কাঠামো ও সৌন্দর্য থাকবে না। জান্নাতের বিশাল রাজ্যে রাজত্ব করার জন্য জান্নাতের সাজে জান্নাতবাসীদের দেহ সাজানো হবে। জান্নাতি নারী ও পুরুষ কি পাবে ?

সেখানে তাদের সব কিছুর পরিবর্তন হবে। নতুন দেহ ও নতুন বয়স হবে। মুমিন ব্যক্তিরা নতুন ভাবে নিজেকে আবিষ্কার করবে। 

জান্নাত বাসীদের দেহের উচ্চতা হবে ৬০ হাত লম্বা। হজরত আদম (আ) কে যখন সৃষ্টি করা হয়েছিল এবং বেহেশতে পাঠানো হয়েছিল তার উচ্চতা ছিল ৬০ হাত। তাই যারা জান্নাতে প্রবেশ করবে তার উচ্চতা হবে ৬০ হাত অর্থাৎ হজরত আদম (আ) এর আকৃতি বিশিষ্ট। 

হাদিস শরীফে বলা হয়েছে ,মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা) বলেছেন , যারা জান্নাতে প্রবেশ করবে তারা আদম (আ.)-এর আকৃতিবিশিষ্ট হবে। তার পর থেকে এ পর্যন্ত মানুষের আকৃতি ক্রমান্বয়ে কমে আসছে। (বুখারি, হাদিস : ৬২২৭)

শক্তিমত্তার দিক থেকেও দুনিয়ার শক্তির তুলনায় ভিন্ন হবে। দুনিয়ার শক্তির চেয়ে তখন শক্তি বেশি হবে। হাদিস শরীফে বলা হয়েছে ,হজরত মুহাম্মদ (সা) বলেছেন , জান্নাতে প্রত্যেক মুমিনকে এত এত পরিমাণ দৈহিক শক্তি প্রদান করা হবে। প্রশ্ন করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! তারা এমন করতে সক্ষম হবে? তিনি বলেন, প্রত্যেককে এক শ জনের সমান শক্তিমত্তা প্রদান করা হবে। (তিরমিজি, হাদিস : ২৫৩৬)

হজরত মুহাম্মদ (সা) বলেছেন :

জান্নাত বাসীদের চেহারা পূর্ণিমার রাতের চাঁদের মতো উজ্জ্বল হবে। হাদিস শরীফে বলা হয়েছে ,আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত ,হজরত মুহাম্মদ (সা) বলেছেন ,‘যে দল প্রথমে জান্নাতে প্রবেশ করবে তাদের চেহারা পূর্ণিমার রাতের চাঁদের মতো উজ্জ্বল হবে। 

তারা সেখানে থুতু ফেলবে না, নাক ঝাড়বে না, মলমূত্র ত্যাগ করবে না। সেখানে তাদের পাত্র হবে স্বর্ণের; তাদের চিরুনি হবে স্বর্ণ ও রৌপ্যের, তাদের ধুনুচিতে থাকবে সুগন্ধি কাষ্ঠ। তাদের গায়ের ঘাম মিসকের মতো সুগন্ধময় হবে। তাদের প্রত্যেকের জন্য এমন দুজন স্ত্রী থাকবে, যাদের সৌন্দর্যের কারণে গোশত ভেদ করে পায়ের নলার হাড়ের মজ্জা দেখা যাবে।জান্নাতি নারীরা কি পাবে 

 তাদের মধ্যে কোনো মতভেদ থাকবে না; পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ থাকবে না। তাদের সবার অন্তর এক অন্তরের মতো হবে। তারা সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর তাসবিহ পাঠ করতে থাকবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৩২৪৫)

জান্নাতীগণ কখনো বৃদ্ধ হবে না। তারা একই বয়সী থাকবে। জান্নাতীগণ চিরসবুজ ও সব সময় তরুণ থাকবে।  মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, জান্নাতিরা জান্নাতে প্রবেশের সময় তাদের শরীরে লোম থাকবে না, দাড়ি-গোঁফও থাকবে না এবং চোখে সুরমা লাগানো থাকবে। তারা হবে ৩০ অথবা ৩৩ বছরের যুবক। (তিরমিজি, হাদিস : ২৫৪৫)

জান্নাতি পুরুষ কি পাবে ?

জান্নাতি পুরুষদের জন্য ৭০ জন করে হুর নির্ধারণ করা হয়েছে। হুর শব্দটি স্ত্রীলিঙ্গ। নারীদের প্রতি পুরুষদের বেশি আসক্তির কারণে কুরআনে পুরুষদের জন্য হুরের কথা বলা হয়েছে। জান্নাতি নারীর ক্ষেত্রে স্বামীর ব্যাপারে কিছু বলা হয় নি। এবং জান্নাতি নারীরা কি পাবে 

কিন্তু এটা বলা হয়নি যে তাদের কোনো সঙ্গী থাকবে না। তারা সেখানে একা একা থাকবে। বনু আদমের মধ্যে থেকেই তাদের স্বামী থাকবেন। 

মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআন শরীফে বলেছেন , ‘তোমাদের জন্য সেখানে রয়েছে, যা কিছু তোমাদের মন চাইবে এবং যা তোমরা দাবী করবে।  (সূরা : হা-মীম সাজদাহ,আয়াত নং :  ৩১)।

জান্নাতে পুরুষেরা ৭০ জন হুর পাবে। কিন্তু নারীর জন্য কি আছে? বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই এই প্রশ্নের উত্তরে যেটা পাওয়া যায় তা হল, নারীরা  দুনিয়ার স্বামীকে পাবে। আর যদি কোনো জান্নাতি নারীর দুনিয়াতে একাধিক বিয়ে হয় তাহলে দুনিয়াতে তার যে স্বামী তাকে বেশি ভালোবাসত তাকে পাবে। 

জান্নাতি পুরুষ কি পাবে ?

আর কোনো নারী যদি জান্নাতি হয় কিন্তু তার স্বামী যদি জাহান্নামী হয় তাহলে জাহান্নাম থেকে মুক্তির পরে তার স্বামীর সাথে মিলিত হবে। এবং জান্নাতি নারীরা কি পাবে 

আর যদি স্বামী চিরস্থায়ী জাহান্নামি হয়, তাহলে তার এখতিয়ার থাকবে, সে ইচ্ছে করলে অবিবাহিত জান্নাতি পুরুষও বিয়ে করতে পারে, অথবা পুরুষ হুরও বিয়ে করতে পারে। একজন নারী একাধিক হুর পুরুষ পাওয়ার কথা সহিহ সনদে কোথাও বর্ণিত আছে কি না? আমাদের জানা নেই।

কোনো অবিবাহিত নারীর জপিডি মৃত্যু হয় এবং সে যদি জান্নাতে যায় তাহলে  সে ইচ্ছে করলে জান্নাতি কোন অবিবাহিত পুরুষকে বিয়ে করতে পারবে। আর না চাইলে পুরুষ হুর আল্লাহ তাআলা সৃষ্টি করে তার সাথে বিয়ে করিয়ে দেবেন। (মাজমাউল ফতোয়া ১৫/৩)

 

 

কেউ মারা গেলে যা করতে হবে বা আমাদের করণীয় কি ?

Sharing Is Caring:

Leave a Comment