হাশরের মাঠে ৫টি প্রশ্ন করা হবে উত্তর দিতেই হবে

মানুষ মরণশীল।জন্মিলে মরিতে হবে – অমর কে কথা কবে এ কথাটি চিরন্তন সত্য। মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে বলেছেন , প্রতিটি প্রাণীকেই একদিন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। (সূরা আনকাবুত ,আয়াত নং: ৫৭)

মানবজাতির জন্য পৃথিবী হলো কেবল মাত্র পরীক্ষার স্থান। পরীক্ষার খাতায় যার যেমন খুশি লিখতে পারে। শেষে এর ফলাফল বের হয়। যে যত ভালো লিখতে পারে সে বেশি নম্বর পায় আর যে খারাপ লিখছে সে কম নম্বর পায়। 

তেমনি মানুষের জন্য পরীক্ষার স্থান হলো পৃথিবী। যার যেমন খুশি চলতে পারে ,যা খুশি করতে পারে। আর এ পরীক্ষার ফলাফল মানুষ মৃত্যুর পরে হাশরের মাঠে পেয়ে থাকে। যার নেক আমল বেশি হয় সে পুরুষ্কার স্বরূপ জান্নাতের অফুরন্ত সুখ পাবে আর যার নেক আমল কম সে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে। 

দুনিয়াকে আখিরাতের শস্য ক্ষেত ও বলা হয়। শস্য ক্ষেতে যেমন কৃষক ভালো বীজ রোপন করলে এবং ভালো পরিচর্যা করলে ভালো ফলন পেয়ে থাকে আর খারাপ বীজ রোপন করে পরিচর্যা না করলে ভালো ফলন পায় না। 

তেমনি মানুষ যদি দুনিয়াতে ভালো কাজ করে ,আল্লাহর ইবাদাত বন্দেগী করে, তার আদেশ নিষেধ মেনে চলে ,হারাম হালাল মেনে চলে তাহলে সে জান্নাত লাভ করলে আর যদি তা না করে এর উল্টো করে তাহলে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে। 

অনেকেই মনে করেন যৌবনে অনাচার অর্থাৎ খারাপ কাজ করে বৃদ্ধ বয়সে নেক আমল করলে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু একজন মানুষ কত দিন বাঁচবে তা কারো জানা নেই। বৃদ্ধ হওয়ার আগেই অনেকেই মারা যায়। 

যৌবনে ইবাদাত করলে যে সওয়াব পাওয়া যায় তা অন্য সময়ে পাওয়া যায় না। হজরত জিবরাইল (আ) বলেছেন ,পৃথিবীর জমিনে কত ফোটা বৃষ্টির পানি পড়ল তার হিসাব আমি দিতে  পারি কিন্তু যৌবনে ইবাদাত করলে মহান আল্লাহ তায়ালা যে পরিমান নাকি প্রদান করে থাকেন তার হিসাব আমি দিতে পারি না। 

আমাদের প্রথম থেকেই মহান আল্লাহ তায়ালার সব কিছু মেনে চলতে হবে। এ বিষয়ে হজরত মুহাম্মদ  (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা পাঁচটি বিষয়কে অপর পাঁচটি বিয়ষের পূর্বে গুরুত্ব প্রদান করো- ১. যৌবনকে বার্ধক্য আসার আগে। ২. সুস্থতাকে রোগাক্রান্ত হওয়ার আগে। ৩. সচ্ছলতাকে দরিদ্র হওয়ার আগে। ৪. অবসরকে ব্যস্ত হওয়ার আগে। ৫. হায়াতকে মৃত্যু আসার আগে। (তিরমিজি)

মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষ এবং জ্বীন জাতিকে সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তার ইবাদাত বন্দেগী করার জন্য ,তার হুকুম মেনে চলার জন্য। আমাদের চলার পথে শয়তান বাধা প্রদান করে থাকে ,আমাদের সঠিক পথে চলতে বাঁধা দিয়ে থাকে। 

খারাপ পথে দিকে নিয়ে যায়। কিন্তু আমাদের শয়তানের প্ৰচনায় পড়া যাবে না। মানুষকে আল্লাহ তায়ালা “আশরাফুল মাখলুকাত “ বলেছেন। এর অর্থ হলো সৃষ্টির শ্রেষ্ঠতম জীব। 

মানুষ মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি, তাই মানুষ স্বভাবতই অন্য সব সৃষ্টি থেকে যেমন উত্তম, তেমনি শয়তানের থেকেও শ্রেষ্ঠ। সে কখনোই শয়তানের কাছে পরাজিত হতে পারেনা। তাই প্রতিটি মুহূর্তে শয়তানকে পরাজিত করার জন্য লড়াই করাই মানুষের কাজ। 

আমরা অনেকেই দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি রমজান মাসে রোজা রাখি এতেই মনে করি আমাদের সব কাজ শেষ। কিন্তু দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে অল্প কিছু সময় ব্যয় হচ্ছে আর বাকি সময় কি কাজে ব্যয় করি তার হিসাব একদিন আমাদের সবাইকে দিয়ে হবে। 

এই সময়ের হিসাব নিয়ে কিয়ামতের দিন মানুষকে পাঁচ টি  প্রশ্ন করা হবে। হজরত ইবনে মাসউদ (রা) হতে বর্ণিত , তিনি বলেন হজরত মুহাম্মদ (সা) বলেন ,কিয়ামতের দিন মানুষের পা এক বিন্দু পরিমান ও নড়াতে  পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তার কাছে এ পাঁচটি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ না করা হবে। 

হাশরের মাঠে যে পাঁচটি প্রশ্ন করা হবে। সেগুলো হলো : 

হাশরের মাঠে যে পাঁচটি প্রশ্ন করা হবে।

১।  সর্ব প্রথম তাকে প্রশ্ন করা হবে, ‘তুমি তোমার সারা জীবন কোন পথে কাটিয়েছো?’

২।  এরপর প্রশ্ন করা হবে, ‘যৌবনকালে কোন আমল করেছো?’ এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেহেতু যৌবনে মানুষ সবচে’ বেশি কাজ করতে পারে, তার শক্তিও থাকে অফুরান, তাই বিশেষভাবে এ সময়ের হিসাব চাইবেন আল্লাহ তায়ালা।

৩।  তৃতীয় প্রশ্ন হবে, ‘ধন-সম্পদ কোন পথে উপার্জন করেছো?’

৪।  চতুর্থ প্রশ্ন, ‘কোন পথে ধন সম্পদ ব্যয় করেছো?’

৫।  পঞ্চম প্রশ্ন, ‘দীন ইসলাম সম্পর্কে যতোটুকু জেনেছো, সে অনুযায়ী কতটুকু আমল করেছো।’ (তিরমিযি)

Sharing Is Caring:

Leave a Comment

Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.

Powered By
100% Free SEO Tools - Tool Kits PRO

সকল প্রকার ইসলামিক
বই । Video | Mp3