সালাতুল আওয়াবিন নামাজের নিয়ম | নিয়ত এবং ফজিলত 

মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষ ও জীন জাতিকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদাত বন্দেগী করার জন্য। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা ৮২ বার নামাজের কথা উল্লেখ করেছেন। অন্য কোনো বিষয় নিয়ে এত বার বলা হয় নি। একজন মুমিন ব্যক্তির জন্য নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম। 

সকল সুস্থ সবল নর নারীর ওপর নামাজ আদায় করা ফরজ। একজনের পরিবর্তে অন্য জন নামাজ  আদায় করা যাবে না। বিনা কারণে নামাজ কাজা করলে গুনাহ হয়। নামাজকে বেহেশতের চাবি কাঠি বলা হয়। 

পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নত নামাজের বাইরেও কিছু নফল নামাজ রয়েছে। ফরজ আদায়ের পর যারা নফল আদায় করে তাদের প্রতি রয়েছে আল্লাহর বিশেষ রহমত। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ব্যতীত আরো অনেক নফল নামাজ রয়েছে। যার ফজিলত অনেক। তার মধ্যে একটি নফল নামাজ হলো আওয়াবিন এর নামাজ। 

আমরা অনেকেই আওয়াবিন নামাজের নাম শুনেছি কিন্তু এই নামাজ কিভাবে এবং কখন আদায় করতে হয় তা অনেকের অজানা। আশা করি এখন থেকে আপনাদের সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। 

সালাতুল আওয়াবিন নামাজের সময় সালাতুল আওয়াবিন এর নামাজ মাগরিব নামাজের পর থেকে ইশার নামাজের আগ পর্যন্ত পড়া যায়। এটাই আওয়াবিন নামাজের সময়।

সালাতুল আওয়াবিন নামাজ কত রাকাত 

আওয়াবিন নামাজ পড়ার সময় হলো মাগরিব থেকে এবার নামাজের আগ পর্যন্ত ,ঐটুকু সময়ে যত  রাকাত সম্ভব সালাতুল আওয়াবিন এর নামাজ আদায় করা যায়। তবে ২০ রাকাতের ওপর পড়া যাবে না। ২ রাকাত থেকে ২০ রাকাত পর্যন্ত পড়া যায়।  তবে উত্তম হচ্ছে কমপক্ষে ৬ রাকাআত পড়া।

সালাতুল আওয়াবিন নামাজের নিয়ত উচ্চারণ 

নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’য়ালা রাকায়াতাই ছালাতিল আওয়াবিনা সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’য়ালা মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার। 

অনুবাদ :সালাতুল আওয়াবিন দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করার উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে নিয়ত করলাম ,আল্লাহু আকবর। 

সালাতুল আওয়াবিন নামাজের নিয়ম 

দুই দুই রাকাআত করে আওয়াবীনের নামাজ আদায় করা যায়। যেকোন সূরা দ্বারা এই নামাজ পড়া যায়। উভয় রাকাআতেই সূরা ফাতিহার পর অন্য সূরা মিলাতে হবে এবং আখেরী বৈঠক তাশাহুদ বা আত্তাহিয়্যাতু, দরুদ শরীফ ও দোয়ায়ে মাছূরা পড়ে সালাম ফিরাতে হবে।আওয়াবিন নামাজ ও অন্যান্য নফল নামাজে দীর্ঘ কেরাত, দীর্ঘ রুকু ও সিজদা করা উত্তম। 

সালাতুল আওয়াবিন নামাজের ফজিলত 

হজরত হুজায়ফা রা. বলেন, ‘আমি নবীজির সা. কাছে এসে তার সাথে মাগরিবের নামাজ আদায় করলাম। তিনি মাগরিবের পরে ইশার নামাজ পর্যন্ত নফল নামাজে রত থাকলেন।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ২/১৫)

আওয়াবীনের নামাজহযরত আবু হুরায়রা (রাজি.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের পর ছয় রাকাত নফল নামাজ পড়বে, এসবের মাঝাখানে কথাবার্তা বলবে না, আল্লাহ্ তা’আলা তার ১২ বছরের নফল ইবাদাত করার ছাওয়াব দান করবেন। (১) তিরমিযী শরীফ ১ম খ- ৯৮ পৃৃষ্ঠা। (২) মিশকাত শরীফ ১ম খ- ১০৪ পৃষ্ঠা।

হজরত আম্মার ইবনে ইয়াজিদের ছেলে মোহাম্মদ ইবনে আম্মার রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি আমার পিতা আম্মার ইবনে ইয়াসিরকে রা. দেখেছি, তিনি মাগরিবের পর দুই রাকাত পড়তেন এবং বলতেন, আমি আমার প্রিয় মোহাম্মাদ সা.-কে দেখেছি, তিনি মাগরিবের পর ছয় রাকাত নামাজ পড়তেন এবং তিনি বলতেন, যে বান্দা মাগরিবের পর ছয় রাকাত নামাজ পড়বে তার গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয়।

হজরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করিম সা. বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মাগরিবের পর বিশ রাকাত নফল নামাজ পড়বে আল্লাহতায়ালা তার জন্য বেহেশতে একটি ঘর প্রতিষ্ঠিত করবেন (অর্থাৎ সে বেহেশতে যাবে)’ (তিরমিজি: ১/৯৮)

Sharing Is Caring:

1 thought on “সালাতুল আওয়াবিন নামাজের নিয়ম | নিয়ত এবং ফজিলত ”

  1. সুবহানআল্লাহ,, অনেক কিছু জানতে পারলাম আপনার এই পোস্ট টা পড়ে, আল্লাহ তায়ালা যেন আপনাকে নেক হায়াত দান করেন এবং দ্বীনের পথে কবুল করেন আমিন আমিন আমিন

    Reply

Leave a Comment