জিনা হলো অবিবাহিত দুই জন মানুষের মধ্যে যৌনক্রিয়া। জিনা করার গুনাহ হলো কবিরা গুনাহ। জিনা করার কারণে ইহকালে যেমন শাস্তি রয়েছে তেমনি পরকালেও এর শাস্তি রয়েছে।
ইসলামে যিনাকারীর অনেক ভয়াবহ শাস্তির কথা বলা হয়েছে ,যদি বিবাহিত নারী বা পুরুষ জানায় লিপ্ত হয় তাহলে তার শাস্তি হলো মৃত্যুদন্ড এবং পাথর মেরে মৃত্যুদন্ড।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন ,ব্যভিচারিণী নারী অথবা পুরুষ ,তারা যদি অবিবাহিত হয় তাহলে তাদের প্রত্যেককে ১০০ করে বেত্রাঘাত করো। আল্লাহর বিধান কার্যকর করার কারণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মায়ার উদ্রেক না হয়। যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক। মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে। (সূরা :আন নুর ,আয়াত নং : ০২)
এই শাস্তি শুধু মাত্র অবিবাহিত নারী অথবা পুরুষের জন্য। বিবাহিত নারী পুরুষ হলে তাদের শাস্তি হলো পাথর নিক্ষেপ করে মৃত্যুদন্ড। আগে বিয়ে হয়েছিল এখন সে একা থাকে এরকম ব্যক্তির জন্য এই শাস্তি অবধারিত।
আর যদি কোনো নারী অথবা পুরুষ এই শাস্তি ভোগ করার আগেই মারা যায় তাহলে মৃত্যুর পরে তাকে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে।
যিনাকারী নারী অথবা পুরুষকে তাদের লজ্জাস্থানের সাথে ঝুলানো হবে। এভাবে তাদের ঝুলিয়ে পোড়ানো হবে। সেই সাথে লোহার চাবুক দিয়ে মারা হবে।
হজরত আ’তা (রহ ) হতে বর্ণিত ,জাহান্নামের দরজাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঘৃণ্য হল সেই দরজা ,যেটা দিয়ে যিনাকারীরা প্রবেশ করবে। যারা জিনার পরিনাম জেনেও জিনায় লিপ্ত হবে।
মখুল আদ -দিমাশ্কি বলেছেন ,জাহান্নামের অধিবাসীরা এমন এক পচা দুর্গন্ধ পাবে যে তারা বলতে থাকবে আমরা এমন দুর্গন্ধ কখনো আস্বাদন করিনি। তখন তাদের বলা হবে এই দুর্গন্ধ হলো যিনাকারীদের লজ্জাস্থানের। এই দুর্গন্ধ সমস্ত জাহান্নামীদের কষ্ট দিবে।
জিনা কারীদের এমন ভয়াবহ শাস্তির কথা ইসলামে বলা হয়েছে। অথচ এমন তিন শ্রেণীর মানুষ আছে যারা জিনা করার পরে ,মিথ্যা কথা বলার পরে এমনকি নামাজ কাযা করে পড়ার পরেও তারা নিষ্পাপ থেকে যায়। (আবু দাউদ, হাদিস নং : ৪৩৯৮ )
তিন প্রকার ব্যক্তি আছে যাদের ওপর থেকে ফেরেশতারা কলম তুলে নিয়েছে। যাদের কোনো গুনাহ লেখা হয় না।
হাদিস শরীফে বর্ণনা করা হয়েছে ,একদিন হজরত ওমর (রা) এর দরবারে একজন যিনাকারী মহিলাকে আনা হয়।হজরত ওমর (রা) তাকে শাস্তি স্বরূপ পাথর নিক্ষেপ করে মৃত্যুদন্ড দিতে বলেছে। তাকে পাথর নিক্ষেপ করতে নিয়ে যাবার সময় হজরত আলী (রা) দেখতে পায়। আলী (রা) মহিলাটিকে শাস্তি দিতে নিষেধ করে।
হজরত ওমর (রা) এর নিকট এ কথা পৌঁছালে তিনি হজরত আলী (রা) এর আসা পর্যন্ত বিচার স্থগিত করে। হজরত আলী (রা) আসলেন এবং বললেন ,হে আমিরুল মুমিনীন ! আপনি ইসলামের কথা অনুযায়ী আদেশ দিয়েছেন তাকে পাথর নিক্ষেপ করার জন্য।
কিন্তু আপনি কি জানেন না তিন ব্যক্তির ওপর থেকে কলম তুলে নেয়া হয়েছে। তাদের কোনো পাপের হিসাব নেয়া হবে না। এই মহিলাটি হলো পাগল। যার ওপর থেকে কলম তুলে নেয়া হয়েছে।
তিন শ্রেণীর ব্যক্তি হলো :
১। ঘুমন্ত ব্যক্তি।
ঘুম থেকে জাগনা হওয়ার আগ পর্যন্ত ফেরেশতারা কলম স্থগিত করে দেয়। ঘুমের মধ্যে সে যা বলুক অরে যাই করুক কোনো কিছুই ফেরেশতারা লেখে না।
২। নাবালক শিশু
নাবালক শিশুর ওপর থেকে ফেরেশতারা কলম তুলে নিয়েছে। তাদের ওপর শরীয়তের হুকুম কায়েম হয় নাই। তাদের কোনো পাপের্ হিসাব ফেরেশতারা নিবে না।
৩। পাগল ব্যক্তি
পাগল ব্যক্তির কোনো পাপের হিসাব ফেরেশতারা নিবে না। তাদের ওপর থেকে কলম তুলে নেয়া হয়েছে।