নারীদের হারাম সাজ | মেয়েদের যে ৬ টি সাজ হারাম

নারীদের সাজ সজ্জার ব্যাপারে মহান আল্লাহ তায়ালা অনুমতি দিয়েছেন। মহান আল্লাহ তায়ালা সৌন্দর্যকে পছন্দ করতেন।  কিন্তু সাজ সজ্জা করতে পারবে শুধু স্বামীকে দেখানোর জন্য অরে বাকি সবার সামনে পর্দা মেনে চলবে। সাজসজ্জা করে অন্য পরপুরুষের সামনে গেলে তাতে গুনাহ হবে। 

হজরত মুহাম্মাদ (সা) বলেছেন ,স্বামী ,বাবা এবং আপন ভাইয়ের সামনে যাওয়ার ইসলাম সমর্থন করে। তাদের সামনে সাজসজ্জা করা যাবে। তবে শুধু মাত্র স্বামীর জন্য সাজাই উত্তম। স্বামীর উদ্দেশ্যে সাজসজ্জা করা সওয়াবের কাজ। স্বামীকে খুশি করার উদ্দেশ্যে সাজ সজ্জা করা ইসলামে নির্দেশ রয়েছে। 

হজরত মুহাম্মদ (সা) কে জিজ্ঞেস করা হল , ‘কোন নারী উত্তম? হজরত মুহাম্মাদ  (সা.) উত্তরে বললেন, যে স্বামীকে আনন্দিত করে যখন সে (স্বামী) তার দিকে তাকায়।’ (নাসাঈ হা/৩২৩১; মিশকাত হা/৩২২৭; ছহীহাহ হা/১৮৩৮)। তারপরও ইসলামে মেয়েদের সাজসজ্জার ব্যাপারে কিছু বিধি বিধান রয়েছে। ইসলাম ৬ টি সাজসজ্জাকে হারাম করেছে।  

মেয়েদের হারাম সাজসজ্জা গুলো বর্ণনা করা হল:

১। মাথার পরচুলা 

নারিরা মাথার  চুলকে বেনি বা ঝুটি বেধে রাখে ,আতি ইসলাম সমর্থন  করে ।তবে চুল বেশি লম্বার আন্দাজ জেন পরপুরুষ করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে ।কারণ নারির চুলের সৌন্দর্য পুরুষকে আকৃষ্ট করে ।চুল বেশি দেখানোর উদ্দেশ্যে কৃত্তিম চুল লাগানো হারাম। স্বামীরা চাইলেও কোনো স্ত্রী মাথায় কৃত্তিম চুল লাগাতে পারবে না। 

হজরত মুহাম্মদ (সা) বলেছেন ,শেষ জামানায় এমন কিছু নারী হবে ,যাদের মাথার চুল হবে উঠের পিঠের মতো। তোমরা তাদের অভিশাপ  করো ,কারণ তারা অভিশপ্ত।ফ্যাশনের জন্য চুল ছোট করে কাটা যাবে না ,তবে চুলের অগ্রভাগ এলোমেলো হলে সামান্য কাটা যাবে। না কাটাই ভালো। 

২।  ভ্রু প্লাক করা 

ভ্রু প্লাক করা ,দাঁত চিকন করে মাঝে ফাঁকা করা শরীরে ট্যাটু অঙ্কন করা হারাম। যারা ভ্রু প্লাক করে এবং দাঁত চিকন করে তাদের ওপার আল্লাহ তায়ালা এবং হজরত মুহাম্মদ (সা) লা’নত করেছেন। কেননা সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য আল্লাহর সৃষ্টিকে পরিবর্তন করে ফেলা হয়েছে। 

হাদিস শরীফে এসেছে ,মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা) অভিশাপ করেছেন ওই সব নারীর ওপর যারা নিজেদের শরীরে ট্যাটু অঙ্কন করে এবং অন্যকে করার জন্য উৎসাহ দেয়। 

৩। কপালে টিপ্ পড়া 

নারীদের কপালে টিপ্ পড়া হজরত মুহাম্মদ (সা) নিষেধ করেছেন। হজরত ইব্রাহিম (আ) এর সাথে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা রয়েছে। 

হজরত ইব্রাহিম (আ.)-কে যখন আগুনে নিক্ষেপ করার জন্য চড়ক স্থাপন করেছিল; তখন ফেরেশতারা অন্যপ্রান্ত থেকে বাধা দিচ্ছিল। তখন শয়তান এসে নমরুদের লোকেদের পরামর্শ দিয়েছিল, যখন ফেরেশতারা বাধা দেবে তখন তাদের সামনে খারাপ নারীদের এনে রাখতে।

যাদের কপালে টিপ থাকবে এবং তারা উলঙ্গ থাকবে। এতে করে রহমতের ফেরেশতারা দূরে সরে যাবে। তোমরা ইব্রাহিম (আ) কে আগুনে পোড়াতে পারবে। তাই করা হলো। নারীদের উলঙ্গ করে এনে সামনে বসিয়ে দেয়া হলো।

অতঃপর রহমতের ফেরেশতারা চলে গেল। তখন থেকে নারীদের কপালে টিপ দেয়া বিধানটি ইসলামে নিষিদ্ধ রয়েছে। কারণ এটি খারাপ কর্মে লিপ্ত নারীদের প্রতিক হিসেবে ধরা হতো।

৪। ঘণ্টাযুক্ত নুপুর পড়া 

মহিলার নাক বা কান ফুঁড়িয়ে তাতে অলংকার ব্যবহারের ব্যাপারে ইসলামে বৈধতা রয়েছে। এভাবে গলায় হার বা পায়ে নূপুর পরাও বৈধ। তবে যদি নূপুরে বাজনা থাকে, তাহলে ঘরের বাইরে পরপুরুষের সামনে তা পরে হাঁটাচলা করা জায়েজ নেই।

একদিন মা আয়েশা (রা.) এর নিকট কোনো এক বালিকা বাজনাদার নুপুর পরে আসলে তিনি তাকে বললেন: খবরদার! তা কেটে না ফেলা পর্যন্ত আমার ঘরে প্রবেশ করবে না। 

অতঃপর তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ঘরে ঘণ্টি থাকে সেই ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না। (সুনানে আবু দাউদ হাদিস : ৪২৩১; সুনানে নাসাঈ হাদিস : ৫২৩৭)। সহিহ মুসলিমে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ঘণ্টি, বাজনা , ঘুঙুর হলো,‌ শয়তানের বাদ্যযন্ত্র। (সহিহ মুসলিম হাদিস : ২১১৪)।

৫। সুগন্ধি ব্যবহার করা 

সুগন্ধি ব্যবহার করা সুন্নত। মেয়েরা এমন ভাবে সুগন্ধি ব্যবহার করবে ,যাতে ওই ঘ্রান স্বামী ব্যতীত অন্য পরপুরুষ না পায়। মেয়েরা শুধু স্বামীর জন্যই বাড়িতে সুগন্ধি ব্যবহার করবে। সুগন্ধি ব্যবহার করে বাড়ির বাইরে বের হলে স্বামী যদিও সাথে থাকে তারপর হারাম কেননা ওই সুগন্ধির ঘ্রান পরপুরুষ বুঝতে পারবে। 

হজরত মুহাম্মদ (সা) বলেছেন,পুরুষেরা ঘ্রান পাবে এমন উদ্দেশ্যে সুগন্ধি ব্যবহার করে কোনো মহিলা যদি পুরুষের মাঝে চলা ফেরা করে ,তাহলে সে একজন যিনাকারী মহিলা হিসেবে গণ্য হবে। (সহীহুল জামে হাদিস ,১০৫)

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘পুরুষের সাজসজ্জা হলো- সুগন্ধি লাগানো, যা আকর্ষণীয় রঙের হবে না। আর নারীদের সাজসজ্জা হলো- রংবেরঙের, তবে তার সুগন্ধি যেন বাইরে না ছড়ায়।’ (সুনানে তিরমিজি: ২৭৮৭)

৬।  নখ বড় রাখা 

হাত – পায়ের নখ বড় রাখা বিজাতীয়দের স্বভাব। এটি ইসলাম সমর্থন করে না। অনেক সময় নখের মধ্যে ময়লা জমে থাকে ,খাবার খাওয়ার সময় তা পেতে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। 

অজু করার সময় বড় নখের কারণে অজু  করতে সমস্যা হয়। চুল পরিমান জায়গায় অজুর পানি না পৌঁছালে অজু হবে না। বড়  নখের কারণে অজুর পানি সব জায়গা পৌঁছাতে পারে না। ফলে আমাদের অজু সঠিক ভাবে হয় না। যার কারণে শরীর নাপাক থেকে যায় এবং ওযু ছাড়াই নামাজ পড়া হয়। যা গুনাহের কাজ। 

প্রতি সপ্তাহে হাত ও পায়ের নখ কাটা সুন্নত ,অন্তত দুই সপ্তাহে একবার হলেও কাটবে। তবে ৪০দিনের বেশি না কাটা অবস্থায় অতিবাহিত হলে গুনাহ হবে। (মুসলিম ,হাদিস নং : ২৫৮)

Sharing Is Caring:

Leave a Comment