নামাজের ফরজ কয় টি এবং কি কি

ইসলাম ৫ টি রুকন এর ওপর নির্মিত ।পাঁচটি রুকনের মধ্যে নামাজ সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ । নামাজ ইসলামের দ্বিতীয় রুকন । পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ প্রত্যেক মুসলিম নর নারীর ওপর ফরজ করা হয়েছে । 

নামাজকে বেহেশতের চাবি বলা হয়। পবিত্র কুরআন শরীফে ৮২বার সালাত শব্দ উল্লেখ করে নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।  নিয়মিত নামাজ পড়লে আল্লাহর হুকুম মেনে চললে মৃত্যুর পরে জাহান্নামের সাজা ভোগ করতে হবে না। 

তাই আমাদের প্রত্যেক মুসলিম নর নারীর ফরজ করা হয়েছে। নামাজ আমরা সঠিক ভাবে পালন করতে পারছি কি না ?সে বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। 

নামাজের মধ্যে কতগুলো ফরজ কাজ রয়েছে যেগুলো আমাদের অনেকের অজানা। ফরজ শব্দের অর্থ হলো অবশ্যই পালনীয়। নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে নামাজের ভিতরে এবং নামাজের বাহিরে কোনো ফরজ যদি পালন করা না হয় বা বাদ পরে তাহলে নামাজ হবে না। 

তাই নামাজের ফরজ কয় টি এবং কি কি ?নামাজের ভিতরের ফরজ কয়টি এবং বাহিরের ফরজ কয়টি ? তা আগে জানতে হবে এবং সতর্কতার সাথে পালন করতে হবে। 

এই সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করি এই লেখাটি পরে আপনারা সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। 

নামাজের ফরজ কয়টি 

নামাজের মধ্যে মোট ১৩ টি ফরজ রয়েছে। এই ১৩টি ফরোজকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। কতগুলো নামাজের ভেতরের ফরজ আবার কত গুলো নামাজের বাহিরের ফরজ।

যে ফরজ কাজগুলো নামাজের ভিতরে আদায় করতে হয় সেগুলোকে নামাজের  আরকান বলা হয়।  নামাজের ভিতরের ফরজ ৬ টি।

যে ফরজ কাজগুলো নামাজের বাহিরে আদায় করতে হয় সে কাজগুলোকে নামাজের  আহকাম বলা হয়। নামাজের বাহিরের ফরজ কাজ ৭ টি। 

নামাজের আরকান ৬ টি বর্ণনা করা হলো 

১। তাকবীরে -তাহরীমা বলা 

নামাজ শুরু করার সময় “আল্লাহু আকবার “ বলা। (সুরা মুদদাসসির : আয়াত ৩)

২। কিয়াম করা 

নামাজের জন্য সোজা হয়ে দাঁড়ানো। ফরজ এবং ওয়াজিব নামাজ দাঁড়িয়ে পড়া। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন ,তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে বিনীত ভাবে দাঁড়াবে।  (সূরা : বাকারা ,আয়াত : ২৩৮)

৩। কেরাত পাঠ করা 

সূরা ফাতিহা পাঠ করার  পর সে কোন সুরা মিলিয়ে পাঠ করা ।মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন ,তোমরা কুরআন থেকে যত টুকু সহজ হয় ততটুকু পাঠ কর ।(সুরা ঃ মুজাম্মিল,আয়াত ঃ ২০)

৪। রুকু করা 

প্রত্যেক রাকাতে এক বার রুকু করা ফরজ ।রুকু হল দাঁড়ানো থেকে অর্ধনমিত হওয়া ।দুই হাত হাঁটু পর্যন্ত যাবে এবং মাথা আর পিঠ সমান্তরাল হবে ।বসে নামাজ পরলেও কপাল হাঁটু পর্যন্ত নিয়ে হবে । (সুরা বাক্বারা : আয়াত ৪৩)

৫। সেজদাহ করা 

প্রতি রাকাতে দুই বার সেজদাহ দেওয়া ফরজ ।সেজদার সময় নাক ও কপাল মাটিতে রাখতে হবে ।আল্লাহ তায়ালা বলেন ,হে ঈমানদারগন !তোমরা রুকু কর এবং সেজদাহ কর। (সুরা হজ : আয়াত ৭৭)

৬। শেষ বৈঠকে নামাজ শেষ করা 

নামাজের শেষ রাকাতে বসে তাশাহুদ ,দুরুদ ও দোয়া পরতে যতটুকু সময় লাগে ততটুকু সময় বসা ।সালামের মাধ্যমে নামাজ শেষ করা ।  (আবু  দাউদ ১/১৩৯, হাদিস নংঃ- ৯৭০)।

নামাজের আহকাম ৭ টি বর্ণনা করা হলো 

১। শরীর পাক 

 নামাজের বাহিরের ফরজ কাজ গুলর মধ্যে সরব প্রথম শরীর পাকের কথা বলা হয়েছে ।নামাজ শুরু করার পূর্বে শরির পাক এবং পবিত্র করতে হবে  ।(সূরা মায়িদা ,আয়াত নং ৬,তিরমিযী হাদিস )

২। কাপড় পাক 

নামাজ আদায়ের জন্য যে কাপর পরিধান করবে তা পাক ও পবিত্র হতে হবে ।(সুরা মুদ্দাসসির, আয়াত ৪; তিরমিজি হাদিস )

৩। নামাজের জায়গা পাক

নামাজ আদায় করার স্থানটি অবশ্যই পাক -পবিত্র হতে হবে। (সুরা বাকারা, আয়াত : ১২৫; তিরমিজি হাদিস )

৪। সতর  ঢাকা 

পুরুষের  ক্ষেত্রে নাভী থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত এবং মহিলাদের জন্য চেহারা ,দুই হাতের কব্জি এবং পায়ের পাতা পর্যন্ত ঢেকে দিতে হবে। (মনে রাখতে হবে মেয়েদের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ শরীর সতরের অন্তর্ভুক্ত )

৫। কিবলামুখী হওয়া 

কিবলামুখী বা কাবা শরীফের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করা। (সুরা বাকারা, আয়াত ১৪৪; বুখারি )

৬। ওয়াক্ত মতো নামাজ আদায় করা 

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য সুনির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করা হয়েছে। এই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সালাত আদায় করা। (সুরা নিসা, আয়াত : ১০৩; বুখারি )

৭। নামাজের নিয়ত করা 

প্রতিটি কাজ বা আমল করার পূর্বে নিয়ত করতে হয়। তেমনি নামাজ শুরু করার পূর্বে নামাজের নিয়ত করা ফরজ। (বুখারি ১/২,    হাদিস : ১)

Sharing Is Caring:

Leave a Comment