যে  ছয় প্রকার নারী জাহান্নামে যাবে নারীরা নামাজ পরেও জাহান্নামে যাবে।

নারীরা নিয়মিত নামাজ পরে ,রোজা রেখে ,পর্দা করে ,যত নেক আমল করেন তারপরও তারা  জাহান্নামে যাবেন যদি এই কাজগুলো  করে থাকেন। অথচ মহিলাদের জান্নাতে যাওয়া অনেক সহজ। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ ) বলেছেন,

 মেয়েরা ৪ টি কাজ করলে সহজে জান্নাতে যেতে পারবে। 

  1. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়লে 
  2. রমজান মাসে রোজা রাখলে   
  3. সতীত্বের হেফাজত  করলে (পর্দা রক্ষা  করে এবং ব্যভিচার থেকে বিরত থেকে )
  4. স্বামীর খেদমত করলে ,স্বামীকে খুশি করলে ,স্বামীর কথা মত চললে।

এমন নারীর জন্য জান্নাতের ৮ টি দরোজাই খুলে দেয়া হবে। যে কোনো দরজা দিয়ে ইচ্ছামত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। (তিরমিযী ও তাবরানী )

আজকের সমাজে অনেক নারীই রয়েছে যারা নেককার ,পরহেজগার ,রোজাদার ,অনুগত। কিন্তু তারপরেও নারীদের কিছু ভুল ভ্রান্তির কারণে তারা জাহান্নামে যাবে।  হজরত মুহাম্মদ (সাঃ ) বলেছেন ,৯৯ জন নারীর মধ্যে ১ জন জান্নাতে যাবে আর বাকি সবাই জাহান্নামে যাবে। 

বুখারী ও মুসলিম শরীফ  হাদিসে আছে ,উসামা ইবনে জায়েদ (রা ) থেকে বর্ণিত হজরত মুহাম্মদ (সাঃ ) বলেছেন ,আমি জান্নাতের দরজায় দাঁড়ালাম ,দেখলামঃযারা জান্নাতে প্রবেশ করছে তারা অধিকাংশ দুনিয়াতে ছিল দরিদ্র ও অসহায়। আর ধনী ও প্রভাবশালীদের যেতে দেয়া হচ্ছে না। আর আমি জাহান্নামের দরজায় গিয়ে দাঁড়ালাম দেখলাম ,যারা প্রবেশ করছে তাদের অধিকাংশই নারী। 

এ কথা শোনার পর উপস্থিত নারীদের মধ্যে একজন (যার নাম ছিল জাজলা ) মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ ) কে প্রশ্ন করলেন ,ইয়া রাসূলুল্লাহ !আমাদের এই অবস্থা কেন ?কেন আমরা বেশি সংখ্যায় জাহান্নামে যাবো ? হজরত মুহাম্মদ (সাঃ ) তখন বললেন ,কারণ তোমরা স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞ ও বেশি বেশি অভিশাপ দাও। 

নারীরা আর যে যে কারণে জাহান্নামে যাবে সে গুলো হলো : 

রোজা-কবুল-না-হওয়ার-কারণ

১। নামাজ ছেড়ে দেওয়া 

বিশেষ করে ফজরের নামাজ। নারীদের মধ্যে অনেকেই ফজরের নামাজ কাযা করে। অনেক দ্বীনদার মেয়েরাও ৪ ওয়াক্ত নামাজ পরে আর ফজরের নামাজ কাজ করে। হজরত মুহাম্মদ (সাঃ ) ফজরের নামাজের প্রতি অনেক তাগিদ দিয়েছেন ,ফজরের ২ রাকাত সুন্নত নামাজ  গোটা দুনিয়ার থেকে  উত্তম। 

যাকাত না দেওয়া 
যাকাত না দেওয়া

২।  যাকাত না দেওয়া 

বেশির ভাগ নারীই যাকাত দেয়ার ব্যাপারে উদাসীন। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ ) বলেছেন ,টাকার যেমন যাকাত আছে তেমনি গয়নার ও জাকাত আছে। যার সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ আছে তাকে যাকাত দিতে হবে। 

অথচ দেখা যায় ,একজনের আলমারি ভর্তি স্বর্ণ এবং রুপার গয়না আছে তারপরেও যাকাত দেয়  না। যাকাত না  দিলে এই গয়না গুলোই কিয়ামতের ময়দানে সাপ হয়ে দংশন করবে।মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ ) বলেন ,ঐ সাপের একফোঁটা লালা যদি পৃথিবীতে পরে ,তাহলে পৃথিবী বিষে তামা হয়ে যেত। কোনো কিছুই জন্ম নিতে না। 

 আর গচ্ছিত সম্পদ গুলোয় আগুন জ্বালিয়ে পিঠের উপর ছুড়ে মারা হবে ,আর বলা হবে স্বাদ গ্রহণ করো। এই তোমার ধন সম্পদ যার যাকাত তুমি দাওনি। শুধু স্বামীর যাকাত দিলেই হবে না। স্ত্রীর ওপর যদি যাকাত ফরজ হয় তাহলে স্ত্রীকেই যাকাত  দিতে হবে। 

গোসল

৩।  ফরজ গোসল 

অনেক নারীই আছে যাদের গোসল ফরজ হওয়া স্বত্তেও গোসল করে না। নাপাক অবস্থায় চলাফেরা করে ,নামাজ পর্যন্ত পরে না অলসতার কারণে। এই অবস্থায় মৃত্যু বরণ করলে জাহান্নাম ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। এই জন্য গোসল ফরজ হওয়ার সাথে সাথে গোসল করতে হবে। 

নেইলপলিশ

৪।  নেইলপলিশ নাগানো 

অনেক মেয়েরা নেইলপলিশ লাগিয়ে থাকেনা। অনেকেই নেইলপলিশ লাগিয়েই ওযু করে নামাজ আদায় করে ,নেইলপলিশ নাগানোর ফলে ওযু হয় না ,ওযু না হলে নামাজ ও হয় না। ওই অবস্থায় নামাজ পড়লে ওযু না করেই নামাজ আদায় করা হবে ,যা গুনাহের কাজ। নেইলপলিশ লাগানোর ফলে গোসল ও হয় না। গোসল দিলেও শরীর  নাপাক থেকে যায়। 

৫। বেপর্দায় চলা 

অধিকাংশ নারী আছে যারা বেপর্দায় চলাফেরা করে। মুখ খুলে ,চুল খুলে চলে। নারীদের চুল পুরুষেরা দেখলে দেখলে গুনাহ হয়ে থাকে। শুধু নারীরা গুনাহ করছে না ,ওই নারীকে দেখে  পুরুষও  জাহান্নামী হবে। ওই  পুরুষগুলো যতটা গুনাহ করেছে প্রত্যেকটা গুনাহহের্ অংশ  ওই নারীকেও নিতে  হবে। 

যদি কোনো মানুষ নেক আমল করে ,তার আমল দেখে যদি অন্য কেউ আমল করে ,সে নিজে যেমন সওয়াব  পাবে ,ওই অন্য লোকটা আমল করলে ওই খান থেকেও একটা অংশ সে পাবে। আবার কোনো মানুষ যদি গুনাহ করে ,এই গুনাহ যদি অন্য মানুষ করে তার কারণে ,তাহলে এই গুনাহের একটা অংশ সে পাবে। 

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ ) বলেন ,শেষ জামানায় এমন কিছু নারী হবে যারা উটের পিঠের মতো খোঁপা বাধবে। হেলে দুলে চলবে ,পুরুষদেরকে আকৃষ্ট করবে এবং নিজেও পুরুষদের প্রতি আকৃষ্ট হবে। তারা  এমন কাপড় পরবে মনে হবে তারা উলঙ্গ হয়ে আছে। 

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ ) বলেন ,সেই সব মহিলারা জান্নাতে যাওয়া তো দূরের কথা জান্নাতের সুঘ্রাণ ও পাবে না।  অথচ জান্নাতের সুঘ্রাণ ৫০০ বছরের রাস্তার দূর থেকে পাওয়া যায়। 

৬। কৃপণতা 

অধিকাংশ নারীরা কৃপণ হয়ে থাকে। অনেক সম্পদ থাকা সত্ত্বেও দেন করে না। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ ) বলেছেন দানকারী আল্লাহর নিকটতম ,জান্নাতের নিকততম ,মানুষের নিকটতম  ,জাহান্নাম থেকে দূরে। আর যারা দেন করে না তারা আল্লাহর থেকে দূরে ,জান্নাতের থেকে দূরে ,মানুষের থেকে দূরে ,জাহান্নামের নিকটতম। 

৭। কোরবানি করা 

যেসব নারীর ওপর যাকাত ফরজ হয় ,তাদের জন্য কোরবানিও ওয়াজিব হয়। অধিকাংশ নারীরা স্বামীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে। নিজের ওপর কোরবানি ওয়াজিব জেনেও কোরবানি করে না এসব ব্যাপারে কোনো খোঁজ খবর রাখে না। 

৮। গীবত করা 

অধিকাংশ নারীর স্বভাব এমন। তারা কয়েকজন একসাথে হলে কথা না বলে থাকতে পারে না। তাদের বিষয়বস্তু হলো গীবত করা। গীবত করতে করতে তারা জাহান্নামের দরজায় পৌঁছে যায়। যারা গীবত করে তাদের মৃত মায়ের গোশত খাওয়ার সমান তুলনা করা হয়েছে। 

এক বাদশাহের ঘটনা ,তিনি ঘোষণা করলেন যদি কেও চমৎকার মিথ্যা বলতে পারবে তাকে পুরুস্কৃত করা হবে। তখন সবাই ইচ্ছা মত মিথ্যা বলতে শুরু করল। অবশেষে একজন বলল ,আমি এক জায়গায় অনেক নারীকে বসে থাকতে দেখলাম কিন্তু সেখানে সবাই চুপচাপ কেও কারো সাথে কথা বলছে না। 

এ কথা শুনে বাদশাহ উচ্চ স্বরে হেসে উঠলেন এবং বললেন ,যতগুলো মিথ্যা গল্প বলা হয়েছে তারমধ্যে এই গল্প টি শ্রেষ্ঠ। কেননা নারীরা চুপচাপ একজায়গায় কখনো বসে থাকতে পারে না। 

৯। বিধর্মীদের অবলম্বন করা 

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ ) বলেন যারা বিধর্মীদের কালচার গ্রহণ করে ,সে কালচার মোতাবেক চলে ,তারা জাহান্নামী হবে। কিন্তু এখনকার বেশিরভাগ নারীরা বিধর্মীদের কালচার গ্রহণ করছে তাদের আদর্শ মনে করেন। আদর্শ মানতে হবে হজরত ফাতিমা (রাঃ ) কে ,হজরত আয়েশা (রাঃ )কে হজরত মারিয়াম (রাঃ ) কে। 

১০।  অহংকার করা 

যদি কোনো নারীর পিতা ধনী হয় এবং তার চেহারা যদি সুন্দর হয় ,তখন সে এতটাই অহংকারী হয়ে ওঠে যে তার সামনে কোনো নারীর সুনাম করলে সে বরদাস করতে পারে না। অথচ আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন ,আমি তোমাদের মাটি থেকে সৃষ্টি করছি আর এ মাটিতেই ফিরিয়ে নিয়ে যাবো। অতঃপর মাটি থেকেই তুলে আনবো। তাই এ সৌন্দর্যের অহংকার কোনো কাজে আসবে না। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ ) বলেন ,যার অন্তরে বিন্দু পরিমান অহংকার থাকবে ,সে জান্নাতে ঢুকতে পারবে না। 

১১।  অবহেলা 

 নারীদের আরো একটি বিষয় হলো অবহেলা। অধিকাংশ নারীরা তাদের স্বামীর কাছে অনেক আবদার করে থাকে। স্বামীরা তাদের স্ত্রীর আবদার কিভাবে পুরুন করছে ,সেদিকে খবরদারি রাখে না। স্বামীরা বৈধ ভাবে নাকি অবৈধ ভাবে তাদের আবদার পুরুন করছে সে ব্যাপারে তাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। এটাও জাহান্নামে যাওয়ার একটি কারণ। 

১২।  স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞ হওয়া 

স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞ হওয়া যাবে না। যে সব নারীরা স্বামীর অকৃতজ্ঞ করে তারা জাহান্নামে যাবে। স্বামীর প্রতি সন্তুষ্ট থাকতে হবে এবং স্বামীকে ভালোবাসতে হবে। পরিপাটি হয়ে স্বামীর সামনে যেতে হবে ,স্বামীর মন যাতে খুশি হয় এমন কাজ করতে হবে। 

১৩। মিথ্যে কথা বলা 

মিথ্যা কথা বললে অবশ্যই জাহান্নামে যেতে হবে। মিথ্যা কথা বললে কখনো জান্নাতে যেতে পারবে না। 

১৪।  মন্দ নামে  ডাকা

কখনো কাওকে মন্দ নামে বা কাওকে ভেঙ্গ করে ডাকবেন না আল্লাহ তায়ালা বলেন। হে ঈমানদার নেক বান্দারা তোমরা একে অন্যের ভৎর্সনা করো না কাওকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করো না। মন্দ নামে ডাকলে এই অবস্থায় যদি মৃত্যু বরণ করে তাহলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। 

১৫।  লোক দেখানো আমল করা 

অধিকাংশ নারীই লোক দেখানো আমল করে। কোনো পুত্রবধূ তার  শাশুড়ির ভয়ে কিংবা  লোকে কি বলবে এটা ভেবে আমল করে ।সেখানে আল্লাহর ভয় থাকে না ,আল্লাহর সন্তুস্তি থাকে না ।যার ফলে তার আমলের  খাতা হয় শুন্য ।

এসব কারনে অধিকাংশ নারিরা জাহান্নামে যাবে ।

Sharing Is Caring:

Leave a Comment