চার কালেমা মৌখিক বলা ও আন্তরিক বিশ্বাস করার নামই হলো ঈমান । যার ঈমান নাই তাকে প্রকৃত মুসলিম বলা যাবে না। ঈমানের অনেক শাখা প্রশাখা আছে তার মধ্যে সর্ব প্রথম শাখা হলো কালেমা।
হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ )থেকে বর্ণিত হজরত মুহাম্মদ (সা ) বলেছেন ,ঈমানের ৭০ টির বেশি অথবা ৭৩ টি শাখা প্রশাখা আছে, তার মধ্যে প্রথম শাখা হলো কালেমা।
কালেমা পাঠের ফজিলত
হজরত মুহাম্মদ (সাঃ )বলেছেন যদি কোনো ব্যক্তি মৃত্যুর সময় কালেমা পাঠ করে মৃত্যুবরণ করবে ,অবশ্যই ওই ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে। মুমিন বান্দার কাছে কালেমার জিকির সর্বোত্তম জিকির।
হযরত উবাদা ইবনে সামিত (রা) বর্ণনা করেছেন। রাসূল (সাঃ )বলেছেন।, যে ব্যক্তি বেশি বেশি কালেমার জিকির করবে ওই ব্যক্তির জন্য আল্লাহ তায়ালা পরকালে জাহান্নামের আগুনকে হারাম করে দিবেন এবং আকাশের সব রহমতের দরজা খুলে দিবেন।
হযরত আবু হুরায়রা (রা) বর্ণনা করেছেন ,মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ ) বলেছেন ,কোনো বান্দা যদি ইখলাসের সাথে কালেমা পাঠ করে ,তবে তার জন্য আকাশের দরজা গুলো খুলে দেওয়া হয়। (তিরমিজি )
১.কালেমা তাইয়্যেবা
لَا إِلَٰهَ إِلَّا ٱللَّٰهُ مُحَمَّدٌ رَّسُولُ ٱللَّٰ
বাংলা অনুবাদ
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ
কালেমা তাইয়্যেবা অর্থ
আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নাই এবং হযরত মুহাম্মদ (সাঃ )আল্লাহর প্রেরিত রাসূল এবং বান্দা।
কালেমা তাইয়্যেবা ফজিলত
কালেমা তায়্যিবাহ ইসলামের মৌলিক কাঠামো। কোনো বিধর্মী এই কালিমার মাধ্যমে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়। ইহা যদি কোনো শত বছর কুফুরীতে মত্ত ব্যক্তি পাঠ করে তবুও তার জীবনের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।
মুসলমানের কাছে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ “র মর্যাদা সীমাহীন। এটা এমন একটা বাকি যা একজন মানুষ কে অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসে। জীবনের আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়। তবে এ বাক্য টি শুদু মুখে বললে হবে না ,অন্তরে বিশ্বাস করতে হবে।
সহীহ হাদিস শরীফে বলা হয়েছে ,এই কালিমার নেকি যদি এক পাল্লায় রাখা হয় অন্য পাল্লায় যদি আসমান জমিন রাখা হয় তাও কালিমার পাল্লা ভারী হয়ে যাবে।
হযরত আনাস (রাঃ )হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সাঃ )বলেছেন ,কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা বলবেন ,হে মুহাম্মদ !সৃষ্টির মধ্য হতে আপনার উম্মতের মধ্যকার এমন ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করান যে ব্যক্তি একদিন হলেও ইখলাসের সঙ্গে এ সাক্ষ্য দিয়েছে যে ,আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নাই এবং সে দেয়া উপর মৃত্যু বরণ করেছে। (মুসনাদে আহমদ )
হযরত ইতবার বিন মালিক (রা) হতে বর্ণিত ,রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন ,যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহ কে সন্তষ্ট করার জন্য “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ “বলবে ,কিয়ামতের দিন সে এমন ভাবে উপস্থিত হবেন যে ,তার উপর জাহান্নাম হারাম হয়ে গেছে। (বুখারী মুসলিম ,মুসনাদে আহমদ )
২.কালেমা শাহাদাত
أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَٰهَ إِلَّا ٱللَّٰهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ وأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
কালেমা শাহাদাত এর বাংলা অনুবাদ
আশ্হাদু আল-লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু-লা-শারীকালাহু ওয়া আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদান আ’বদুহু ওয়া রাসূলুহু।
কালেমা শাহাদাত এর অর্থ
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নাই। তিনি এক, অদ্বিতীয় এবং আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ তার বান্দা ও প্রেরিত রাসুল।
৩.কালেমা তাওহীদ
سُبْحَانَ ٱللَّٰهِ وَٱلْحَمْدُ لِلَّٰهِ وَلَا إِلَٰهَ إِلَّا ٱللَّٰهُ وَٱللَّٰهُ أَكْبَرُ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِٱللَّٰهِ ٱلْعَلِيِّ ٱلْعَظِيمِ
কালেমা তাওহীদ বাংলা অনুবাদ
সুবহানআল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলীইল আজিম।
কালেমা তাওহীদ অর্থ
মহিমান্বিত আল্লাহ, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নাই। আল্লাহ মহান। সমস্ত পবিত্রতা আল্লাহর, সকল প্রশংসা আল্লাহর। আল্লাহ ছাড়া কোনো শক্তি নাই, কোনো ক্ষমতা নাই, তিনি সম্মানিত, তিনি মহান।
৪.কালেমা তামজীদ
لَا إِلَٰهَ إِلَّا ٱللَّٰهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ ٱلْمُلْكُ وَلَهُ ٱلْحَمْدُ، يُحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ حَيٌّ لَا يَمُوتُ أَبَدًا أَبَدًا، ذُو ٱلْجَلَالِ وَٱلْإِكْرَامِ بِيَدِهِ ٱلْخَيْرُ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
কালেমা তামজীদ বাংলা অনুবাদ
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওলাহুল হামদু উহয়ী ওয়া ইয়োমিতু ওয়া হুয়া হাইয়ুল লা ইয়ামুতু আবাদান আবাদা জুল জালালি ওয়াল ইকরাম বি ইয়াদিহিল খাইর ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির
কালেমা তামজীদ এর অর্থ
আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, তিনি এক ও অদ্বিতীয়। তার কোন অংশীদার নেই। সকল ক্ষমতা এবং প্রশংসা তারই জন্য। তিনিই জীবন ও মৃত্যুর মালিক। তিনি চিরঞ্জীব, তিনি সকল সম্মানের মালিক। তার হাতেই সকল মঙ্গল এবং তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতা রাখেন।