আধুনিক জীবনে মানুষের জীবন ধারায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। উলঙ্গ হয়ে গোসল করার প্রবণতা মানুষের মাঝে ব্যাপক করে বৃদ্ধি পেয়েছে। হাদিস শরীফে বলা হয়েছে , মানুষ এর চেয়ে আল্লাহ তায়ালাকে দেখে বেশি লজ্জা পেতে হবে। গোসলের সময় পুরোপুরি উলঙ্গ হয়ে গোসল করা উচিত নয়।
এক হাদিসে বলা হয়েছে, মুয়াবিয়া বিন হাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, তুমি তোমার স্ত্রী ছাড়া অন্যদের কাছ থেকে তোমার লজ্জাস্থান সর্বদা হেফাজত করো (অর্থাৎ ঢেকে রাখো)।
আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! যদি কোনো ব্যক্তি কোথাও একাকী থাকে! (তখনো কী তা ঢেকে রাখতে হবে?)। তিনি বলেন, অবশ্যই, কেননা আল্লাহকে অধিক লজ্জা করা উচিত। (তিরমিজি, হাদিস : ২৭৬৯) কিন্তু গোসলখানায় যদি কোনো প্রকার পর্দাহীনতা না হয় তাহলে উলঙ্গ হয়ে গোসল করা যাবে।কোনো রকম গুনাহ হবে না।
তবে স্বামী স্ত্রী একসাথে গোসল করা যাবে। হাদিস শরীফে বলা হয়েছে ,মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা) তার স্ত্রী মাইমুনা (রা) ও আয়েশা সিদ্দিকা (রা) এর সাথে একত্রে গোসল করেছেন। এটি সহিহবুখারী ও মুসলিম হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।
উলঙ্গ হয়ে গোসল করা জায়েজ আছে কিন্তু এটা অনুত্তম কাজ। এটা না করাই ভালো। কেননা শয়তান তখন ধোকা দেয়। মানুষের সাথে সব সময় ফেরেশতা থাকে। উলঙ্গ হলে ফেরেশতারা লজ্জা পায়। তার থেকে দূরে থাকে। হাদিস শরীফে উলংগ হয়ে গোসল করার ব্যাপারে অনুৎসাহিত করেছেন।
হজরত ইব্রাহিম (আ ) এর কথা আমরা অনেকেই জানি আবার অনেকের জানা নেই। নমরুদ হজরত ইব্রাহিম (আ ) কে অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করে পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল ।
কিন্তু হজরত ইব্রাহিম (আ) এর সাথে ফেরেশতারা ছিল বলে তাকে আগুনে পোড়ানো সম্ভব হচ্ছিল না। যতবার হজরত ইব্রাহিম (আ) কে আগুনে নিক্ষেপ করা হচ্ছিল ফেরেশতারা ততবারই আগুনে পোড়া থেকে বাঁচতে সাহায্য করেছিল।তখন নমরুদ এবং তার লোকজন একথা বুঝতে পেরে কিছু উলঙ্গ মেয়েকে সামনে রেখে হজরত ইব্রাহিম (আ) কে অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করে।
উলঙ্গ মেয়েদেরকে দেখে ফেরেশতারা লজ্জা পেয়ে হজরত ইব্রাহিম (আ) এর থেকে দূরে সরে থাকার কারণে তাকে অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করতে সক্ষম হয়। কিন্তু মহান আল্লাহ তায়ালা অন্য উপায়ে হজরত ইব্রাহিম (আ) কে অগ্নিকুন্ডে থেকে বাঁচতে সাহায্য করেছিল।
এখান থেকে আমরা বুঝতে পারি উলঙ্গ হয়ে গোসল করা যাবে না। এতে ফেরেশতারা লজ্জা পেয়ে দূরে সরে থাকে। পুরুষেরা নাভি থেকে হাটু পর্যন্ত কাপড় পরে বাকি অংশ খোলা রেখে খোলা মাঠেও গোসল করতে পারবে।
আর মহিলারা পায়জামা বা উড়না সাদৃশ্য ও বুকে গামছা সাদৃশ্য কিছু রেখে পর্দার সাথে গোসল করবে। কেননা আবু দাউদ শরিফে বর্ণিত আছে ,হজরত মুহাম্মদ (সা) ইরশাদ করেছেন ,মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন লজ্জাশীল ও পর্দাকারীদের পছন্দ করেন। তাই তোমাদের কেউ যদি গোসল করে সে যেন পর্দা করে নেয়। (তাহতাবী)