ইসম শব্দের অর্থ নাম আর আজম শব্দের অর্থ শ্রেষ্ঠ। ইসমে আজমের অর্থ হচ্ছে আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নাম। ইসমে আজম মহান আল্লাহর সর্বোত্তম গুন্ বিশিষ্ট নাম।
মহান আল্লাহ তায়ালার সুন্দর সুন্দর নাম রয়েছে। যে নাম গুলোকে আল আসমাউল হুসনা বলা হয়। হাদিস শরীফে আল্লাহর ৯৯ টি নাম বলা হলেও এই ৯৯ টি নামের বাইরে মহান আল্লাহ তায়ালার আরো অনেক নাম রয়েছে যা আমাদের অনেকের অজানা।
এই সব গুলো নামের মধ্যে যে নাম দিয়ে মহান আল্লাহ তায়ালার শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশিত হয় সেই নামকে ইসমে আজম বলা হয়।
হজরত আব্দুর কাদের জিলানি (রহ) বলেন ,”ইসমুল আজম “হলো আল্লাহ শব্দ। তবে এর শর্ত হলো তা পূর্ন একাগ্রতা ও এখলাসের সঙ্গে বলতে হবে। (মিরাকাতুল মাফাতিহ )
ইসমে আজম এর ফজিলত
মনের আশা পুরুনের জন্য মানুষের চেষ্টার কোনো কমতি থাকে না। নিজের চাওয়া পাওয়া পূর্ন করতে মানুষ নানা রকম সাধন করে থাকে।
মনের আশা পূরণের জন্য হাদিস শরীফে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা)” ইসমে আজম “ এর কার্যকারী দিক নির্দেশনার কথা উল্লেখ করেছেন ।
ইসমে আজম এই দোয়া পাঠ করে মহান আল্লাহ তায়ালাকে ডাকলে মহান আল্লাহ তায়ালা বান্দার ডাকে সারা দেন । তার কাছে দোয়া প্রার্থনা করলে আল্লাহ তায়ালা সব থেকে বেশি খুশি হন এবং বান্দার দোয়া কবুল করে নেন।
মহান আল্লাহ তায়ালা ‘আল্লাহ ‘নামটি ইসমে আজম হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছে ।হাদিসের বিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফতহুল বারীতে আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এ হাদিসটিকে ‘ইসমে আজম’র সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও বিশুদ্ধ হাদিস হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
‘হাদিস শরিফে বলা হয়েছে ,মহানবি হজরত মুহাম্মাদ (সা) এক ব্যক্তিকে নামাজে তাশাহুদ ও দরুদ পাঠের পরে সালাম ফিরানর আগে এই দোয়া পরতে শুনলেন ।তখন হজরত মুহাম্মাদ (সা) সাহাবাদের জিজ্ঞেস করলেন ,তোমরা কি জান সে কিসের দ্বারা দোয়া করছে ?
তখন সাহাবারা উত্তর দিলেন আল্লাহ এবং তার রাসুল ভাল জানেন ।মহানবি হজরত মুহাম্মাদ (সা) বললেন , যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ সেই সত্তার কসম ,নিশ্চয়ই এই ব্যক্তি “ইসমে আজম “ এর উছিলায় দোয়া করেছেন। ইসমে আজম এর উছিলায় দোয়া করলে আল্লাহ তায়ালা সেই দোয়া কবুল করেন এবং কোনো কিছু চাইলে মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে দান করেন। ‘(তিরমিযী ,ইবনে মাজাহ )
হজরত আসমা বিন ইয়াজিদ (রা) হতে বর্ণিত ,মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা) বলেছেন ,ইসমে আজম এই দুইটি আয়াতের মধ্যে নিহিত। সূরা বাকারার ৩৬১ নম্বর আয়াত এবং সূরা আল ইমরানের ১ নম্বর আয়াত। (সুনানে আবু দাউদ : ১৪৯৬)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, নিজেদের একান্ত কল্যাণকর চাওয়া পাওয়া পূরণে আল্লাহর প্রতি আন্তরিকতা, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, বিশ্বাস, ভক্তি এবং আস্থা-ভরসা রেখে সংক্ষেপে ‘ইসমে আজম’র আমল করা। আল্লাহকে ডেকে মনের চাওয়া-পাওয়াগুলো পূরণ করার আবেদন করা।
ইসমে আজম দোয়া
বাংলা উচ্চারণ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।
আল্লাহুম্মা ইন্নী~আসআলুকা বিআন্নাকা আন্তাল্লাহু লা-ইলা-হা ইল্লা -আন্তাল আহাদুছ ছামাদুল্লাযী লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইয়ূলাদ ওয়ালাম ইয়া কুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।
আল্লাহুম্মা ইন্নী ~আসআলুকা বিআন্না লাকাল হামদু লা-ইলা-হা ইল্লা আন্তাল হান্নানুল মান্নানু বাদী উস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বি ইয়া যালজালালি ওয়াল ইকরামি ইয়া হাইয়্যু ইয়া ক্বাইয়্যুমু আসআলুকা ওয়া ইলাহুকুম ইলাহুওঁ ওয়াহিদ লা~-ইলা-হা ইল্লা- হুওয়ার রাহমানুর রাহীম, আলিফ লাম- মী-ম আল্লা-হু লা-ইলা-হা ইল্লা- হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যূম, লা-ইলা-হা ইল্লা – আন্তা সুবহানাকা ইন্নী কুন্তু মিনায জালিমীন।
অর্থ
পরম দাতা দয়ালু আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি
হে আল্লাহ! আমি তোমার দরবারে প্রার্থনা করতেছি নিশ্চয় তুমিই আল্লাহ,তুমি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই, তুমি এক, তুমি সেই অপ্রত্যাশী যাঁর কোন সন্তান নেই এবং যিনি জাতও নন এবং যাঁর সমতুল্য কেউই নেই। এ আল্লাহ! আমি তোমার দরবারে প্রার্থনা করতেছি নিশ্চয় সব প্রশংসা তোমারই। তুমি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই, তুমি করুণাময়, ইহছানকার (দাতা)
আসমান জমীনের প্রথম সৃষ্টিকর্তা হে মহত্ত্ব ও গৌরবের অধিকারী,- হে চিরজীবন্ত, হে চিরস্থায়ী ? তোমার দরবারে সওয়াল করতেছি এবং তোমাদের মাবুদ সেই এক অদ্বিতীয় (আল্লাহ ) সেই মেহেরবান দয়াল ব্যতীত কোন মাবুদ নেই । তিনি চিরঞ্জীবন্ত তিনি চিরস্থায়ী তুমি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই, তুমি পাক পবিত্র, নিশ্চয়ই আমি অন্যায়কারীদের মধ্যে।